খুলনায় ক্লাব ‘দখলে’ নিয়ে টানানো হলো গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ের ব্যানার

খুলনার পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাব ‘দখলে’ নিয়ে টাঙানো হয়েছে গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয় লেখা ব্যানার। সোমবার দুপুরে নগরের শান্তিধাম মোড় এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

খুলনা নগরের শান্তিধাম মোড় এলাকায় অবস্থিত পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের কার্যালয় ‘দখলের’ অভিযোগ পাওয়া গেছে গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ওই ক্লাবের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন গণ অধিকার পরিষদের জেলা শাখার নেতা-কর্মীরা। পরে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের সাইনবোর্ডের জায়গায় ‘গণ অধিকার পরিষদ, খুলনা মহানগর ও জেলা কার্যালয়’ লেখা একটি ব্যানার টানিয়ে দেন তাঁরা।

শান্তিধাম মোড়ে অবস্থিত পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাবটির কার্যক্রম যে ভবনে পরিচালনা করা হতো, সেটি মূলত গণপূর্তের একটি দ্বিতল ভবন। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ক্লাবের কার্যক্রম চলত। নিচতলায় রয়েছে আরও কিছু কার্যালয়। ২০১০ সালের দিকে গণপূর্ত বিভাগ থেকে নিজেদের নামে বরাদ্দ নিয়ে আসে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র। এরপর ১৪ বছর ধরে সেখানে ক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের কর্মকর্তারা। আজ হঠাৎ তালা ভেঙে গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা সেখানে প্রবেশ করায় হতভম্ব হয়ে গেছেন তাঁরা।

গণ অধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলাম স্থানীয় এক গণমাধ্যমের ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘আমাদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল, এখানে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের অবৈধ কার্যক্রম চলত। এখানে জুয়া খেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। ৫ আগস্টের পর এসব অভিযোগের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ক্লাবটি অবৈধভাবে জায়গাটি দখল করে আছে। এরপর আমরা আমাদের প্রক্রিয়াতে তাঁদের উচ্ছেদের জন্য বারবার করে বলেছি। তারা সরবে না বিধায় আমরা স্থানীয় ও আরও যেসব রাজনৈতিক দল আছে, সবাইকে বলে এটাকে উচ্ছেদ করার জন্য আজ এসেছি। এখানে যেন কোনো ধরনের অনৈতিক কাজ না হয়, সে জন্য আমরা আজ থেকে এখানে পাহারায় থাকব।’

মুঠোফোনে জানতে চাইলে রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কার্যালয়টি দখলে নেওয়া হয়নি, অনৈতিক কাজ যেন না হয় সে জন্য শিক্ষার্থীরা সেখানে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সেটি ইজারা নেওয়ার জন্য গণপূর্ত ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’

তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশের কারণ জানতে চাইলে রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘বারবার করে বলা হয়েছিল, কিন্তু তারা (পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র) তা শোনেনি। তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। এ কারণে এটা করা হয়েছে।’ গণ অধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর ও জেলা কার্যালয় লেখা ব্যানার টানিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘কে বা কারা পাবে, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে, এ কারণে ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সরকারিভাবে বরাদ্দ নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে সেখানে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন তাঁরা। ছয় মাস ধরে ক্লাবটি তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। সেখানে যদি কোনো অনৈতিক কার্যক্রম চলত, তাহলে সাধারণ মানুষের সেটা জানার কথা। তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।