ধামরাইয়ে ‘রাজনৈতিক বিরোধে’ বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

হত্যাকাণ্ডের শিকার বিএনপি নেতা আবুল কাশেমের স্বজনদের আহাজারি। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেছবি: প্রথম আলো

ঢাকার ধামরাই উপজেলায় বিএনপির স্থানীয় এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আবুল কাশেমের (৫৫) বাড়ি উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা এলাকায়। তিনি গাংগুটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিক বিরোধের জেরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা স্বজন ও পুলিশের।

নিহত কাশেমের ছোট ভাই খলিলুর রহমান জানান, আজ বেলা ১১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর কিছুটা দূরে সড়কে পৌঁছানোর পর ফাঁকা জায়গায় কাশেমকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা। পরে সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কারা কুপিয়েছে বা কতজন ছিল, সেটি এখনো জানতে পারিনি।’

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেরাজুর রেহান প্রথম আলোকে বলেন, আবুল কাশেমকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর ডান পায়ে ও পিঠে গভীর ক্ষতচিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

গাংগুটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় বিএনপির একটি অংশের সঙ্গে প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে কাশেমের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত কাশেমের ছেলে কামরুল হাসান দাবি করেন, দলীয় কোন্দল ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কয়েকজন মিলে তাঁর বাবাকে হত্যা করেছেন। তিনি বলেন, ‘তারা চাপাতি দিয়ে বাবাকে আঘাত করে। সন্দেহ করছি আব্দুল বাসেত, আব্দুল জলিল, বিল্টু, বাবলু, সায়েমসহ সাত থেকে আটজন জড়িত ছিল। তাঁরা ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদের রাজনীতি করেন।’

অভিযোগের বিষয়ে যুবদল নেতা ইয়াসিন ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের রাজনীতির কোনো সুযোগ বিএনপিতে নেই। কাউকে হত্যা তো পরের কথা, অন্যায়ভাবে কিছু বলার সুযোগ নেই। বিএনপি নেতা আবুল কাশেমকে যারা হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে। তিনি বলেন, ‘অনুমানের ওপর ভিত্তি করে আমার সমর্থকেরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলা যুক্তিসংগত হবে না। তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।’

ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন, রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।