কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যকরী কমিটির ১৭টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ ৯টি পদে বিএনপি–সমর্থিত আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা জয়লাভ করেছেন। অন্যদিকে সিনিয়র সহসভাপতিসহ ৬টি পদে জয় পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী–সমর্থিত ল ইয়ার্স কাউন্সিল প্যানেল। সহসাধারণ সম্পাদকসহ দুটি পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নির্বাচনে ভরাডুবি ঘটায় হতাশ জামায়াত–সমর্থিত আইনজীবীরা।
গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত জেলা আইনজীবী সমিতি ভবন ও চকরিয়া আদালত ভবনে ভোট গ্রহণ চলে। রাত ১১টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ বাকের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ নুরুল হুদা, মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফেরেদাউস প্রমুখ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ বাকের বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির ৯১৮ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৮৬৭ জন। ১৭টি পদে বিএনপি ও জামায়াত–সমর্থিত দুটি প্যানেলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এবার আওয়ামী লীগ–সমর্থিত আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নেননি।
১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৭ জনের কার্যকরী কমিটিতে চকরিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলা চৌকি আইনজীবী সমিতি থেকে একজন করে মোট তিনজন প্রতিনিধি রাখা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যকরী কমিটির ১৭টি পদের মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৪টি পদে বিএনপি-জামায়াত–সমর্থিত (যৌথ প্যানেলের) প্রার্থীরা জয় পেয়েছিলেন। অন্যদিকে সিনিয়র সহসভাপতিসহ তিনটি পদে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্যানেল সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ থেকে।
বিজয়ী যাঁরা
বিএনপি–সমর্থিত প্যানেল থেকে এবার সভাপতি পদে ছৈয়দ আলম, সহসভাপতি মোহাম্মদ ইউনুছ, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার, সহসাধারণ সম্পাদক (সাধারণ) মো. মনির উদ্দিন, আপ্যায়ন সম্পাদক মো. আবদুর রহিম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. সাজিদ আবেদীন, সিনিয়র নির্বাহী সদস্য এস এম নুরুল ইসলাম এবং নির্বাহী সদস্য এজাজুল হক ও সাইফুল ইসলাম নির্বাচিত হন।
অপর দিকে জামায়াত–সমর্থিত প্যানেল থেকে সিনিয়র সহসভাপতি পদে মো. ফরিদ উদ্দিন ফারুকী, সিনিয়র নির্বাহী সদস্য মো. আখতার উদ্দিন হেলালী, মোহাম্মদ আমির হোছাইন ও সব্বির আহমদ, নির্বাহী সদস্য আকতারুর রহমান ও মুহাম্মদ আতাউল্লাহ নির্বাচিত হয়েছেন।
ভরাডুবিতে হতাশ জামায়াত
সভাপতি পদে এবার জামায়াতের প্রার্থী শাহজালাল চৌধুরী পেয়েছেন ৩৪৪ ভোট। অপর দিকে বিজয়ী বিএনপির প্রর্থী ছৈয়দ আলম পেয়েছেন ৪৯৭ ভোট। আওয়ামী লীগ–সমর্থিত ভোটাররা বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেওয়ায় জামায়াতের ভরাডুবি হয়েছে বলে ভোটাররা মনে করছেন।
ভোটাররা জানান, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত আইনজীবীরা অংশ না নেওয়ায় দীর্ঘদিনের রেওয়াজ ভেঙে জামায়াত ও বিএনপি পৃথক প্যানেল দাঁড় করায়। ফলে সাধারণ সম্পাদক পদেও হেরেছে জামায়াত। সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খান এবার এবি পার্টির হয়ে নির্বাচন করেছেন। তিনি পেয়েছেন ২৭৩ ভোট। আর জামায়েতের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নুরুল ইসলাম পেয়েছেন ১৯৯ ভোট। আর সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী তাওহীদুল আনোয়ার পেয়েছেন ৩৭২ ভোট।
বিএনপি–সমর্থিত প্যানেলের নবনির্বাচিত সভাপতি ছৈয়দ আলম বলেন, আইনজীবীদের মর্যাদা ফিরিয়ে আনাসহ আদালতে মামলাজট নিরসনে তিনি ভূমিকা রাখবেন।