কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ থেকে আড়াই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ থেকে দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও দাউদকান্দিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ থেকে আড়াই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ঈদযাত্রায় মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে এ অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনের পাশাপাশি এ কাজে অংশ নেন সড়ক ও জনপথ (সওজ), সেনাবাহিনী, হাইওয়ে ও থানা–পুলিশের সদস্যরা।

মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় দুই পাশে চৌদ্দগ্রাম বালিকা বিদ্যালয় থেকে বাজারের অপর প্রান্তে অবস্থিত সোনালী ব্যাংক পর্যন্ত দিনভর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জামাল হোসেন।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় লোকজন জানান, সওজের সম্পত্তি ও ফুটপাত দখল করে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করছিল প্রভাবশালী মহল। অনেক প্রভাবশালী এসব দোকান ভাড়া দিয়ে মোটা অঙ্কের ভাড়া আদায় করছিল। এর কারণে চৌদ্দগ্রাম বাজারে মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকত। এবারের ঈদযাত্রায় মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে এবং মহাসড়কে নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চালানো এ অভিযানে মহাসড়কের দুই পাশের দেড় শতাধিক অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়।

ঈদুল ফিতরে মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে পৌর এলাকার চৌদ্দগ্রাম বাজার অংশে প্রায় ২০০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে জানিয়ে আজ সন্ধ্যায় চৌদ্দগ্রামের ইউএনও মো. জামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘উচ্ছেদ অভিযানের আগে আমরা সম্প্রতি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছি এসব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য। এরপর করা হয়েছে মাইকিং। সর্বশেষ চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাঠিয়ে প্রতিটি অবৈধ দখলদারকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেননি দখলকারীরা। তাঁরা সরে না যাওয়ায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের সময় প্রতিটি ব্যবসায়ীকে তাঁদের মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়।’

অবৈধ দখলের কারণে মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনটিতে প্রায় সময় যানজট লেগে থাকে উল্লেখ করে ইউএনও আরও বলেন, ‘অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কারণে এখন আর যানজট থাকবে না। আমরা এ বিষয় নিয়ে সতর্ক থাক। সামনে কেউ আবারও সড়ক ও জনপথ বিভাগের এসব সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

একই মহাসড়কের কুমিল্লা দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডের দুই পাশের শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। আজ দুপুরে উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন দাউদকান্দির সহকারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেদওয়ান ইসলাম। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষ প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামের বাড়ি আসতে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন নিশ্চিত করতে দাউদকান্দি উপজেলা প্রশাসন এ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। এর অংশ হিসেবে মহাসড়কের উভয় পাশের শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

অভিযান শেষে মো. রেদওয়ান ইসলাম বলেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উজেলার ২০ কিলোমিটার অংশ যানজটমুক্ত রাখতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। উচ্ছেদের আগে দুই দিন মাইকিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়ার কথা ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করায় আজ এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল আবছার, গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম, দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আয়শা আক্তার, নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের দাউদকান্দি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, গৌরীপুর কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি নজরুল ইসলাম প্রমুখ।