বেড়ায় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় ধাক্কাধাক্কি থেকে সংঘর্ষ, আহত ৩০

ছাত্রদলের শোভাযাত্রায় সংঘর্ষের ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল। আজ বুধবার দুপুরে বেড়া বাজারেছবি: প্রথম আলো

পাবনার বেড়া পৌর এলাকায় ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রায় ধাক্কাধাক্কির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই মহল্লার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আজ বুধবার দুপুরে এ ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেড়া পৌর ছাত্রদল নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে আজ সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা সকাল ১০টা থেকেই সরকারি বেড়া বিপিন বিহারী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে সমবেত হতে শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে বেড়া বাজারে পৌঁছালে পৌর এলাকার শেখপাড়া ও সওদাগরপাড়া মহল্লার কয়েকজন কিশোরের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়। এতে দুই মহল্লার লোকজন শোভাযাত্রা চলাকালেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পৌর এলাকার সিনেমা হলমোড়ে এসে শোভাযাত্রাটি পণ্ড হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরে শেখপাড়া, সওদাগরপাড়া ও হাতিগাড়া মহল্লার লোকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে বেড়া বাজারে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ব্যাপক পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে বেড়া পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম (৪৮) আহত হন। এ ছাড়া উভয় পক্ষের রাহাত সওদাগর (১৭), আবু হানিফ (৪০), শাকিল (২২), তুষার সওদাগর (২৪), রাসেল (২৫), শাহজাহান (৩৮), আয়মান (২৬), মনিরুল (২২), কাওসার (২৭), ইমরান (২৭), এন্তাজ (৩৮), সোলাইমান (৪৫), ইয়াসিনসহ (২০) অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সওদাগরপাড়ার রাহাত সওদাগর ও বনগ্রামের আবু হানিফকে গুরুতর অবস্থায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কামরুন্নেছা বলেন, ‘চিকিৎসা নিতে আসা বেশির ভাগই ঢিলের আঘাতে মাথায় আঘাত পেয়েছেন। কয়েকজন আবার ধারালো অস্ত্রের আঘাতেও আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন।’

ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় সংঘর্ষের পর দুই পক্ষের নিক্ষেপ করা ইটপাটকেল এভাবেই পড়ে থাকে। আজ বুধবার দুপুরে পাবনার বেড়া পৌর এলাকার বেড়া বাজারে
ছবি: প্রথম আলো

এ ব্যাপারে বেড়া পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব মানিক হোসেন বলেন, ‘আমরা শোভাযাত্রার সামনের দিকে ছিলাম। পেছনের দিকে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। এই সংঘর্ষ কোনো রকম রাজনৈতিক কোন্দল বা দ্বন্দ্বের কারণে হয়নি।’

বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওলিউর রহমান জানান, শোভাযাত্রার পেছন দিকে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে এখন পর্যন্ত (বিকাল সাড়ে চারটা) সেনা সদস্যদের সঙ্গে তিন থানার (বেড়া, সাঁথিয়া ও আমিনপুর থানা) পুলিশ মিলে টহল দেওয়া হচ্ছে। এলাকায় যাতে আর কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে না পারে, সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।