কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে ও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই: গোলাম পরওয়ার

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠে কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। আজ সোমবার বিকেলেছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘গণমাধ্যমের মাধ্যমে সারা দেশবাসী ও প্রশাসনকে জানতে চাই, আমরা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন চাই।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করার জন্য যতটুকু সংস্কার করা প্রয়োজন, অতটুকু সংস্কার করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। সেই নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে হবে।’

আজ সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠে কর্মী সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মো. মফিদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইদ্রিস আলী।

গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। ২০১৪, ’১৮ ও ’২৪—তিনটি জাতীয় নির্বাচনে আমরা ভোট দিতে পারি নাই। এ সময় হাজার হাজার লোককে হত্যা করেছে, গ্রেপ্তার করেছে, ক্রসফায়ারে দিয়েছে ও আয়না ঘরে নিয়েছে। গুলি করে লাশ পুড়িয়ে ছাই করেছে। হেলিকপ্টারে নিজের দেশের মানুষকে গুলি করেছে। সেই ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে সমস্ত খুনের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনার নির্দেশে লগি–বইঠা দিয়ে সাতজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। মৃতদেহের ওপর দাঁড়িয়ে নাচানাচি করেছিল। সেই দিন থেকে ’২৪ সালের ৫ আগস্ট ১৭-১৮ বছর ইতিহাসের কালো যুগ আমরা পার করেছি। ’৯০–এর গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে রাজনীতি, গণতন্ত্রের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, ২৮ অক্টোবরের পর খুনি হাসিনার নির্দেশে লগি–বইঠার হত্যাকাণ্ড দিয়ে বাংলাদেশ তার গণতন্ত্রের পথ হারিয়ে ফেলেছে।’

গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলছে। ফ্যাসিবাদের লোকেরা জামায়াতে ইসলামীকে যেভাবে নির্মূল করতে চেয়েছিল, তাদের মুখেও এখন ফ্যাসিবাদের সেই গন্ধ পাওয়া যায়। এই পথ সর্বনাশার পথ। ফ্যাসিবাদের যুগের অবসান হয়েছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আসুন অনৈক্য-বিভেদ, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী কোনো ভূমিকা না নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য গড়ি। জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে একটি অবাধ–সুষ্ঠু–নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখি।’

কর্মী সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবুল কালাম, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য মুহাদ্দিস রবিউল বাশার প্রমুখ।