বিনার মহাপরিচালকের অপসারণ চেয়ে কক্ষে তালা, মানববন্ধন
ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালকের (ডিজি) অপসারণ দাবি করে তাঁর কক্ষে তালা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। গতকাল সোমবার তালা ঝোলানোর পর আজ মঙ্গলবার বিনা ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন তাঁরা। কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করার অভিযোগে মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে এ আন্দোলন চলছে।
মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের একান্ত সচিব (পিএস) ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শাহ আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহাপরিচালক স্যার গত শনিবার পর্যন্ত অফিস করেছেন। ঢাকায় সভা থাকায় বর্তমানে সেখানে অবস্থান করছেন। কিন্তু গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মহাপরিচালকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। আজ মানববন্ধন হয়েছে।’
দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা–কর্মচারী, শ্রমিক ও এলাকাবাসীর ব্যানারে বিনার মহাপরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদের অপসারণ দাবি করা হয়। বিনা ভবনে আয়োজিত মানববন্ধনে মহাপরিচালককে পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। দ্রুত অপসারণের পাশাপাশি তাঁর শাস্তির দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিনার প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুল আলম তরফদার, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেজা মোহাম্মদ ইমন, কৃষিবিদ মো. আব্দুর রশিদ ও মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন। বক্তারা বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র–জনতার বিপক্ষে লাঠিমিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন ডিজি। পরিবর্তিত পটভূমিতেও ২৭ ছাত্রলীগ নেতার পদোন্নতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। বঞ্চিত ব্যক্তিদের জ্যেষ্ঠতা প্রদানে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গড়িমসি করা হচ্ছে। পালিয়ে অফিস করাসহ ডিজির বিরুদ্ধে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, ডিজিকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার এই দোসরের সঙ্গে কোনোভাবেই অফিসের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা এক হতে পারছেন না। তিনি এখানে আওয়ামী লীগ দোসরদের ঐক্যবদ্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিনার পরিচালনা পর্ষদের সভায় টানা ১৫ বছরে পদোন্নতি বঞ্চিত ১২ কর্মকর্তাকে জ্যেষ্ঠতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন না হলেও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ২৭ সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পদোন্নতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন মহাপরিচালক।
বর্তমান মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘ সময় পরিচালক (প্রশাসন) পদে দায়িত্ব পালনের পর বিগত সরকারের সময় গত বছরের ২ জুন মহাপরিচালক পদ লাভ করেন। অভিযোগের বিষয়ে মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভিয়েনাতে অবস্থান করার সময় খবর পাই, মহাপরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। এখন যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরাই ৫ আগস্টের পর আমাকে দায়িত্ব পালন করতে সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের সব দাবি ও সমস্যা আমি নিরসনের চেষ্টা করেছি। ১২ কর্মকর্তাকে বিগত সময় পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। আমি পদোন্নতির উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের জটিলতায় সেটি আটকে গেছে। বিষয়টি সমাধানে আমি চেষ্টা করছি।’