শিক্ষক–কর্মকর্তাদের পোষ্য কোটা বাতিল, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য থাকছে ১ শতাংশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ পোষ্য কোটার হার পুনর্নির্ধারণ করেছে প্রশাসন। এতে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। তবে সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য এক শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। আজ সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

গত বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় চার শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নতুন প্রশাসন সেই কোটা ১ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ করে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরপরই কয়েকজন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে ২০ সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে। তিন দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা থাকলেও প্রায় দেড় মাস পর আজ বিকেলে এই নতুন সিদ্ধান্ত জানাল প্রশাসন। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন।

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পোষ্য কোটা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্তের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাঁরা এটি পুরোপুরি বাতিল চান। কেউ কেউ আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন। আবার এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার।
আন্দোলনকারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘প্রশাসনের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সহযোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনা করে খুব দ্রুতই আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।’

তবে সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যাঁদের পরিবারের অবস্থা একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর চেয়ে নাজুক। আমরা এ বাস্তবতায় আন্দোলন শুরু করেছি। ফলে কোনো প্রকার কোটা রাখার পক্ষে আমি নেই। এখনো প্রশাসনের হাতে সময় আছে। পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করা না হলে কাল সকালে আমি একা হলেও প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেব।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটিতে আলোচনার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মানবিক কারণে ন্যূনতম এ কোটা রাখা হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা যেটা ভালো মনে করবে, সেটা করুক।’

আরও পড়ুন