বিজিবির আপত্তির মুখে অস্থায়ী পোস্ট স্থাপন থেকে সরে এল বিএসএফ

ফেনীর পরশুরামের নিজকালিকাপুর সীমান্তে মুহুরী নদীর বল্লারমুখার বেড়িবাঁধের পাশে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যদের অবস্থানছবি: সংগৃহীত

ফেনীর পরশুরামের নিজকালিকাপুর সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) আপত্তির মুখে অস্থায়ী পোস্ট স্থাপন থেকে সরে এসেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ওই এলাকায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মুহুরী নদীতে বল্লারমুখার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। যার কিছু অংশের কাজ নিয়ে বিএসএফ আপত্তি জানিয়েছে।

স্থানীয় গ্রাসবাসী ও বিজিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে সীমান্তে লাগানো বাতি বন্ধ করে বালুর বস্তা দিয়ে তিনটি অস্থায়ী পোস্ট স্থাপনের কাজ শুরু করে বিএসএফ। তবে বিজিবির মৌখিক প্রতিবাদের মুখে সেসব আবার সরিয়ে নেওয়া হয়।

বিজিবি-৪ ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ২০২৪ সালের আগস্টে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বল্লারমুখার বেড়িবাঁধের ৭০ মিটার সংস্কারকাজ চলমান। তবে সীমান্ত আইন অনুযায়ী শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে যেকোনো নতুন কাজ হলে দুই দেশের অনুমোদন প্রয়োজন। বেড়িবাঁধের ৭০ মিটারের মধ্যে ৩০ মিটার ১৫০ গজের মধ্যে পড়েছে, যা নিয়ে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের সমন্বয় অব্যাহত আছে। অনুমোদন সাপেক্ষে ওই ৩০ মিটারের কাজ সম্পন্ন হবে। তবে ১৫০ গজের বাইরে থাকায় ৪০ মিটারের কাজ বর্তমানে চলমান।

বিএসএফের অস্থায়ী পোস্ট স্থাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. মোশারফ হোসেন বলেন, বিজিবি টহল দল সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল অংশ হিসেবে ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় সীমান্তের ওপারে বালুর বস্তা ফেলে বিএসএফের তিনটি অস্থায়ী পোস্ট স্থাপনের প্রস্তুতি দেখতে পান বিজিবির সদস্যরা। পরে বিজিবি আপত্তি জানালে বিএসএফ অস্থায়ী পোস্ট তিনটির সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলের পানিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ১০২টি স্থানে ভেঙে যায়। এতে ফেনীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জেলার পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর ও ফুলগাজী উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা। ভয়াল সেই বন্যায় অন্তত ৩০ জন নিহত হন। বন্যা প্রতিরোধেই বল্লারমুখার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে।