শরীয়তপুরে মাজার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, এসপির সভা

শরীয়তপুরের জাজিরায় ফকির করিম শাহের মাজার ওরফে আরশেদ পাগলার মাজার ভাঙচুর করার পর অগ্নিসংযোগ করা হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জাজিরার মেহের আলী মাদবরকান্দি গ্রামেছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় দুটি মাজার ভাঙচুর করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মাজারে ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত জাজিরার বিলাশপুর ইউনিয়নের মেহের আলী মাদবরকান্দি গ্রামে অবস্থিত ফকির করিম শাহ মাজার (আরশেদ পাগলার মাজার) ও নড়িয়ার মোক্তারেরচর ইউনিয়নের পোড়াগাছা গ্রামে অবস্থিত মজিদিয়া দরবার শরিফ মাজারে (শালু শাহ মাজার) এ ঘটনা ঘটে।

মাজার দুটি ভাঙচুরের ঘটনায় শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুবুল আলম বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে গতকাল রাতে সভা করেছেন। আর কোনো মাজার বা ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা–ভাঙচুর না করার আহ্বান জানানো হয় সভা থেকে।

আরও পড়ুন

পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেহের আলী মাদবরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আরশেদ মোল্যা চিশতিয়া নুরুল্লাহপুরের ভক্ত। ১৫ বছর আগে বাড়ির সামনে তিনি ফকির করিম শাহের নামে একটি মাজার গড়ে তোলেন, যা এলাকায় আরশেদ পাগলার মাজার নামে পরিচিত। প্রতিবছর ভাদ্র মাসে ও মাঘ মাসে সেখানে ওরস হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ ওই ওরসে আসেন। গতকাল জুমার নামাজের পর ওই এলাকার সাত-আট শ লোক জড়ো হয়ে মাজারে হামলা করেন। এরপর মাজারের স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করেন তাঁরা।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, নড়িয়া উপজেলার পোড়াগাছা গ্রামে মজিদিয়া দরবার শরিফ অবস্থিত। ওই দরবার শরিফ শালু শাহর মাজার নামে পরিচিত। পদ্মা নদীর ভাঙনকবলিত ওই এলাকায় ২০-২৫ বছর আগে মাজারটি গড়ে তোলা হয়। প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে সেখানে ওরস হয়। গতকাল জুমার নামাজের পর স্থানীয় ২৫০–৩০০ ব্যক্তি জড়ো হয়ে মাজারটিতে ভাঙচুর চালান।

গতাকাল রাতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ মতবিনিময় সভায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ওলামা পরিষদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দলের নেতারা অংশ নেন।

আরও পড়ুন

সভায় জেলা জামায়াতের সাবেক আমির খলিলুর রহমান বলেন, একটি গোষ্ঠী বিভিন্ন স্থানে ও স্থাপনায় হামলা করে উগ্রবাদ সৃষ্টি করতে চায়। তা হতে দেওয়া যাবে না। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। মাজারসহ বিভিন্ন স্থানে যদি কোনো অসামাজিক কাজ হয়ে থাকে, তা আইনের মাধ্যমেই মোকাবিলা করতে হবে।

সভায় বিএনপির জেলা পর্যায়ের চার নেতা বক্তব্য দেন। জেলা বিএনপির একজন সহসভাপতি বলেন, ‘আমরা চাই না কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হোক, দেশ একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের দিকে যাক।’

আরও পড়ুন

এসপি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘যাঁরা মাজার দুটিতে হামলা চালিয়েছেন, তাঁদের ভিডিও আমাদের কাছে এসছে। আমরা হামলাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব। নেতারা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সব ধরনের উগ্রবাদ ও বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা বন্ধ করতে তাঁরা পুলিশকে সহায়তা করবেন।’