জমি নিয়ে বিরোধে বোন ও ভাবিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক ব্যক্তি তাঁর বোন ও ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার শানঘাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন উপজেলার শানঘাট গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজের মেয়ে জোসনা খাতুন (৫২), পুত্রবধূ জাকিউল ইলমা (৪২)। এর মধ্যে জাকিউল ইলমা গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। অভিযুক্ত আবদুল আজিজের ছোট ছেলে মহিবুল ইসলাম পলাতক।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আবদুল আজিজের তিন ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে জমিজমার বণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধ মীমাংসার জন্য আজ সকালে তাঁরা আলোচনায় বসেন। ৩৫ বিঘা কৃষিজমির বণ্টন হয়ে যাওয়ার পরে বাড়ির পাশের পুকুরের বণ্টন নিয়ে তাঁদের ভাইবোনদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। আজিজের ছোট ছেলে মহিবুল ইসলাম প্রায় দেড় একরের পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে দখলে রেখেছিলেন। পুকুরের ভাগাভাগি নিয়ে তাঁদের মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়।
এ সময় মহিবুল ইসলাম তাঁর বোন জোসনা খাতুন ও বড় ভাই জাহিদ হোসেনের স্ত্রী জাকিউল ইলমাসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। প্রতিবেশীরা খবর পেয়ে তাঁদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবদুল আল মারুফ বোন জোসনা খাতুন ও জাকিউল ইলমাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত পরিবারের অপর সদস্যদের কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এই পুকুর নিয়ে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি আবদুল আজিজের সন্তানদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এতে মহিবুল ইসলামকে তাঁর বড় ভাই জাহিদ হোসেন মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন। আবদুল আজিজের বড় ছেলে সাইদ হোসেন ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। পরিবার নিয়ে তিনি সেখানেই থাকেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত জোসনা খাতুনের স্বামী কুদরত-ই-হাফিজ বলেন, তাঁর শ্বশুরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলে আসছিল। তাঁর শ্যালক মহিবুল ইসলাম বাড়ির পাশের ১ একর ২৮ শতক জমির একটি পুকুর দখল করে আছে। ওই পুকুরে ভাইবোনদের ভাগ নির্ধারণ করার জন্য আজ সবাই মিলে আলোচনায় বসা হয়েছিল। একপর্যায়ে মহিবুল ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই আমার স্ত্রী জোসনা খাতুন, জাকিউল ইলমা নিহত হয়। এ ঘটনায় গাংনী থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মহিবুল ইসলামকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।