ঝিনাইগাতীতে কারাদণ্ডের পর শ্রমিকদল নেতার নেতৃত্বে ইউএনও কার্যালয় ঘেরাও

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর গতকাল সোমবার রাতে ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদের সামনের সড়ক অবরোধ ও ইউএনওর কার্যালয় ঘেরাও করেন এক দল লোকছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ বালুবোঝাই গাড়ি আটক করে চারজনকে সাজা দেওয়া হয়। পরে শ্রমিকদলের এক নেতার নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কার্যালয় ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ করেন একদল লোক। তখন সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ওই শ্রমিকদলের নেতাকেও কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ঝিনাইগাতী উপজেলা শ্রমিকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ আরমান (৩৮), ঝিনাইগাতী উপজেলার বন্ধভাটপাড়া গ্রামের হেলাল (৩০), রামেরকুড়া গ্রামের হজরত (২৮), বারোয়ারী গ্রামের আজিমউদ্দিন (৩১) ও শ্রীবরদী উপজেলার চরিয়াপাড়া গ্রামের মনিরাজ (২৫)। মাসুদ আরমান ঝিনাইগাতী বাজারের আলী আকবরের ছেলে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রাণী ভৌমিক গতকাল রাতে মাসুদ আরমানকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা এবং অন্য ৪ জনকে ১০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

উপজেলা প্রশাসন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইগাতীর মহারশি ও সোমেশ্বরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রাণী ভৌমিকের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত ঝিনাইগাতী বাজারের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালান। এ সময় ঝিনাইগাতী বাজারে অবৈধ বালুবোঝাই একটি গাড়ি আটক করা হয়। পরে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ১৫(১) ধারায় ওই গাড়িতে থাকা হেলাল, হজরত, আজিমউদ্দিন ও মনিরাজকে ১০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ওই ঘটনার পর উপজেলা শ্রমিকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ আরমানের নেতৃত্বে দুই শতাধিক লোক রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদের সামনের সড়ক অবরোধ ও ইউএনওর কার্যালয় ঘেরাও করেন। এ সময় বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা দণ্ডপ্রাপ্ত চারজনের মুক্তি দাবি করেন এবং ইউএনও, সহকারী কমিশনারসহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের নাম ধরে কটূক্তিমূলক স্লোগান দেন।

পরে শেরপুর থেকে সেনাবাহিনীর সদস্য ও ঝিনাইগাতী থানার পুলিশের সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। অবৈধভাবে বালু ব্যবসা পরিচালনা করা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মাসুদ আরমানকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনিন্দিতা রাণী ভৌমিক। রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত মাসুদ আরমানের বিরুদ্ধে অবৈধ বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পরিবেশ রক্ষা ও জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।