রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে অবস্থানকারী ছাত্রলীগের পদধারী শিক্ষার্থীদের হলত্যাগ করার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক লাভলী নাহার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আদেশক্রমে গত শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ নির্দেশ দেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমন কোনো আদেশ দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সংশোধিত নতুন বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ।
গত শনিবার দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আদেশক্রমে জানানো যাচ্ছে যে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের ছাত্রী নিপীড়ক ও ছাত্রলীগের পোস্টেড (পদধারী) নেত্রীদের কাল (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার মধ্যে হলত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হলো।’
হল সূত্র জানায়, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ছাত্রলীগের পদধারী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের কক্ষে গিয়ে তাঁদের হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন প্রাধ্যক্ষ লাভলী নাহার। পাশাপাশি মাইকিং করে হল ছাড়তে বলা হয়। নির্দেশ না মানলে পুলিশে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
ছাত্রলীগের পদধারী নেত্রীরা বলছেন, বৈধ আবাসিকতা থাকা সত্ত্বেও তাঁদের হলত্যাগ করতে হুমকি দিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেত্রী বলেন, ‘আমরা হলের বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থী। আমাদের বিরুদ্ধে তো কোনো লিখিত অভিযোগ নেই। তাহলে আমাদের কেন হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হবে? আমাদের অনেকেরই সামনে পরীক্ষা। কারও কারও পরীক্ষা চলছে। এ অবস্থায় হল প্রাধ্যক্ষ এসে নেমে যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন।’
বিষয়টি নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর আজ বিকেলে সংশোধিত নতুন বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এতদ্দ্বারা অত্র হলের নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, আজ রাত আটটার আগে তাঁদের হলত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক লাভলী নাহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা হল প্রশাসনেরই সিদ্ধান্ত। ভুল করে বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন লেখা হয়েছে। তবে আমি একটা সংশোধিত নোটিশ দিয়েছি।’
একজন আবাসিক শিক্ষার্থীকে নোটিশ দিয়ে প্রাধ্যক্ষ হল থেকে বের করে দিতে পারেন কি না, জানতে চাইলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘দায়িত্বশীল জায়গা থেকে আমরা কোনো শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শের বিচার করতে পারি না। সব শিক্ষার্থীই আমাদের কাছে শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত হন। তবে কোনো শিক্ষার্থী শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে হল প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকলে নামিয়ে দিতে পারে না।’