টাঙ্গাইলে জোয়াহেরুল, আতাউরসহ চার সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি
টাঙ্গাইলের আটটি আসনের মধ্যে চারটিতেই বর্তমান সংসদ সদস্যরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। তাঁদের জায়গায় নতুন চারজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বাদ পড়া নেতাদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের বহুল আলোচিত খান পরিবারের আতাউর রহমান খান, সদরের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও কালিহাতী থেকে নির্বাচিত হাসান ইমাম খান ওরফে সোহেল হাজারীও আছেন। অন্য চারটি আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যরা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।
নতুন যাঁরা মনোনয়ন পেলেন টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কামরুল হাসান খান, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম তালুকদার ওরফে ঠান্ডু, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মামুনুর রশিদ ও টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনুপম শাহজাহান ওরফে জয়।
যে চারটি আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যরা মনোনয়ন পেয়েছেন, তাঁরা হলেন টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির, টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে আহসানুল ইসলাম ওরফে টিটু এবং টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে খান আহমেদ শুভ। এর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক চারবার নৌকার মনোনয়নে পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। অন্য তিনজন একবার করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, টাঙ্গাইল-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য শামসুর রহমান খানের ভাই ও আমানুর রহমান খানের বাবা। শামসুর রহমান খান এ আসন থেকে সাতবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনবার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। আমানুর রহমান খান ২০১২ সালে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন। আওয়ামী লীগের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা অভিযুক্ত হওয়ার পর তাঁরা আত্মগোপন করেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আতাউর রহমান খান আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন। এবার তাঁর জায়গায় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কামরুল হাসান খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়ে টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পরই নিজ নির্বাচনী এলাকা সখীপুর ও বাসাইলে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ দেখা দেয়। এবার তাঁর জায়গায় সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনুপম শাহজাহানকে মনোনয়ন দিয়েছে দল। তিনি এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত মোমেন শাহজাহানের ছেলে। ২০১৪ সালে শওকত মোমেনের মৃত্যুর পর অনুপম উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালে তিনি মনোনয়ন পাননি।
টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী সংসদ থেকে পদত্যাগ করার পর আসনটি শূন্য হয়েছিল। একই বছরের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হন।
এ ছাড়া টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তাঁর জায়গায় যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মামুনুর রশিদকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।