রাজশাহীতে রিকশাচালককে জুতাপেটা করা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসান এক রিকশাচালককে জুতাপেটা ও লাঠি দিয়ে মারধর করছেন– এমন ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছেছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

রিকশাচালককে জুতাপেটা করায় রাজশাহীর পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসানকে (রাসেল) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-৫ (প্রশাসন ও শৃঙ্খলা) শাখার এক প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের কপি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘রিকশাচালককে নির্দয়ভাবে প্রহার করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ ধরনের আচরণ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। সরকারি কর্মচারী হিসেবে তাঁর (জাহিদ হাসান) এ ধরনের আচরণ অশোভনীয়, অসংগত, চাকরি শৃঙ্খলাপরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।’ জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, কোয়ার্টারের সামনে জাহিদ হাসান এক রিকশাচালককে পায়ের জুতা খুলে পেটাচ্ছেন। পরে প্রাইভেট কারের ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে চালকের শরীরে ও রিকশায় আঘাত করতে থাকেন তিনি। এ ছাড়া গালাগাল করতেও দেখা যায় তাঁকে।
ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল সোমবার পর্যন্ত দুই দিন ছুটি নেন জাহিদ। রোববার নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ঘটনার জন্য তিনি অনুতপ্ত বলে উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, ‘এমন ঘটনা কি আর কারও জীবনে ঘটেনি? আমি অন্যায় করেছি। কিন্তু এত বড় শাস্তি কি আমার পাওনা ছিল?’ ওই ঘটনার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমাও প্রার্থনা করেন এই সমাজসেবা কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার ওই ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে গত শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গত রোববার সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘বিষয়টি আমাদের কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে জেনে গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ওপর থেকেই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’