শামীম ফকির বাড়িতে এসে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার কথা জানিয়েছিলেন বড় ভাইকে। একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কর্মস্থলে ফেরার কথা ছিল তাঁর। পরে বাড়িতে যাওয়া বাতিল করে অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পথে গতকাল বুধবার সড়ক দুর্ঘটনায় শামীমসহ তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন। পাঁচজনকে হারিয়ে স্বজনেরা শোকাহত।
পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা এলাকায় শামীমদের বাড়িতে মাতম চলছে। গতকাল রাতে নিহত শামীম ফকিরের ভাতিজা পারভেজ ফকির বলেন, চাচা কয়েক বছর ধরে পরিবার নিয়ে বাড়িতে আসার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত আসতে পারেন না। এ বছর একইভাবে ঈদের আগে পরিবার নিয়ে বাড়ি আসার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে চাচা মুঠোফোনে ভিডিও কল দিয়ে বাড়ির সবার সঙ্গে কথা বলেন। সেই কথাই যে শেষ কথা হবে কে জানত!
গতকাল সকালে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী রিলাক্স পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে শামীম ফকির (৪০), তাঁর স্ত্রী সুমি আক্তার (৩৪), মেয়ে আনিসা ও ৪ মাস বয়সী ছোট মেয়ে, বোনের মেয়ে তানু মারা যায়। নিহত শামীমের আরেক মেয়ে প্রেমা (১৩) গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।
নাদিরা আক্তার নামের এক স্বজন বলেন, ‘দুর্ঘটনায় একটি পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে এভাবে মৃত্যুর ঘটনা এলাকায় কখনো আগে ঘটেনি। আমরা এখন ভাবছি, শামীমের মেয়েটা একা কীভাবে বাঁচবে?’
শামীম ফকির দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার মিরপুরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।
শামীম ফকিরের ভাই আসলাম ফকির বলেন, ‘বুধবার বিকেলে আমি ভাইয়ের মৃত্যু খবর পাই। মঙ্গলবার রাতে যে ভাইয়ের সঙ্গে শেষ কথা হবে, তা কখনো ভাবিনি।’
পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আলম খান বলেন, ঘটনাটি তাঁরা শুনেছেন। ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।