গাংনীতে বন্ধুর পাওনা টাকা না দেওয়ার জেরে যুবদল নেতাকে গলা কেটে হত্যা: র্যাব
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার যুবদল নেতা আলমগীর হোসেনের (৩৪) কাছে দুই লাখ টাকা পেতেন বন্ধু মফিকুল ইসলাম। চার বছর আগে টাকা নিলেও পরিশোধ না করায় ক্ষিপ্ত হন মফিকুল। এর জের ধরে গত বুধবার সন্ধ্যায় মফিকুল ইসলাম তাঁর আরও দুই বন্ধু মিলে আলমগীর হোসেনকে উপজেলার সহড়াবাড়িয়া কামারখালী মাঠে নিয়ে গিয়ে হাত বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেন।
আজ শুক্রবার দুপুরে মেহেরপুর র্যাব কার্যালয়ের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফউল্লাহ। যুবদল নেতা আলমগীর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রবিউল ইসলাম (৩৬), মফিকুল ইসলাম (৩৯) ও মো. আলমগীর আলী (৪০)। তাঁরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কামারখালী কৃষি মাঠ থেকে গাংনী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি আলমগীর হোসেনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি উপজেলার বাঁশাবড়ায়ী গ্রামের মইনুদ্দীন শেখের ছেলে। দুই মাস আগে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশে ফিরে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরে বিষয়টি নিয়ে নিহত ব্যক্তির পরিবার ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে র্যাব প্রাথমিকভাবে জানতে পারে, আলমগীরের কাছে তাঁর বন্ধু মফিকুল ইসলাম দুই লাখ টাকা পেতেন। এ নিয়ে কয়েক দফা সালিসও বসে এলাকায়। কিন্তু বিদেশ থেকে এসেও টাকা দিতে না পারায় আলমগীর হোসেনের ওপরে ক্ষোভ জন্মেছিল মফিকুল ইসলামের। টাকা ফেরত না দেওয়ায় তাঁকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনার দিন বিকেলে আসামি রবিউলের দোকানে আলমগীর হোসেন আড্ডা দিতে যান। পরিকল্পনা অনুযায়ী এ সময় রবিউল তাঁকে মফিকুল ইসলামের টাকা পরিষদ করার জন্য নগদ টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে সহড়াবাড়িয়া কামারখালী মাঠে যান। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন মফিকুল ইসলাম ও আলমগীর আলী। হাত বেঁধে তিনজন মিলে গলা কেটে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে আসেন তাঁরা।
কোম্পানি কমান্ডার আশরাফউল্লাহ বলেন, আলমগীর হোসেন চার বছর আগে নেওয়া ধারের টাকা ফেরত দিতে না পারায় তাঁকে হত্যা করে আসামিরা। মাঠের মধ্যে তাঁকে হত্যা করে ঘটনাস্থলের চার কিলোমিটার দূরে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো হাঁসুয়াটি ফেলে চলে যান।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বানি ইসরাইল বলেন, র্যাব আলমগীর হোসেন হত্যায় অভিযুক্ত তিন আসামিকে গাংনী থানায় হস্তান্তর করেছে। তাঁদের নামে গত বৃহস্পতিবার নিহতের ভাই ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।