নরসিংদীতে জেল থেকে বেরিয়ে মামলার বাদীকে কুপিয়ে হত্যা

লাশ
প্রতীকী ছবি

নরসিংদী সদর উপজেলায় স্বজনদের বিরুদ্ধে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে নিজ বাড়ির উঠানে মো. কাদির মিয়া (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার সকালে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত কাদির মিয়া সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার হোসেন মিয়ার ছেলে। পেশায় তিনি চায়ের দোকানদার ছিলেন। যাঁদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ, তাঁরা সম্প্রতি জামিন নিয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। জমি নিয়ে বিরোধে হামলার অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন কাদের মিয়া।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির উঠানে একটি চেয়ার নিয়ে বসেছিলেন কাদির মিয়া। এ সময় তাঁর চাচা আসাদ মিয়ার পরিবারের সদস্যরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাঁকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকেন। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবিহ্বল কাদিরের স্বজনেরা এগিয়ে এলে তাঁরা চলে যান। মাটিতে লুটিয়ে পড়া কাদিরকে দ্রুত উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পরপরই জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর লাশ হাসপাতালটির মর্গে রাখা হয়েছে।

নিহত কাদিরের বাবা হোসেন মিয়া বলেন, ‘আমার বড় ভাই আসাদ মিয়া, তাঁর তিন নাতি রিটন, পাভেল ও তুহিন এবং দুই মেয়ে মোসলেমা ও ফাতেমা আমার বাড়ির উঠানে এসে সবার চোখের সামনে ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমার ২২ শতাংশ জমি তাঁরা জোর করে নিতে চান। গত ২৫ মে তাঁরা আমাকে ওই জমির জন্য কুপিয়েছিলেন। আমাকে কোপানোর ঘটনায় ছেলে কাদির তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। ওই মামলায় ২২ দিন জেল খেটে সম্প্রতি তাঁরা বাড়িতে ফেরেন। ওই ক্ষোভে আজ তাঁরা বাড়ির উঠানে কাদিরকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।’

হোসেন মিয়া আরও বলেন, তাঁর বড় ভাইয়ের কোনো ছেলে নেই। তাঁর চার মেয়ে। কাদিরকে হত্যা করার জন্য ভাই তাঁর মেয়েদের সন্তানদের ডেকে এনে বাড়িতে একত্র করেছিলেন। এর আগে তাঁকে কোপানোর সময়ও তাঁদের নিয়ে এসেছিলেন। মামলা করেছিলেন বলে তাঁর তরতাজা ছেলেকে খুন হতে হলো। তিনি এ ঘটনার সর্বোচ্চ বিচার দাবি করেছেন।

হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ইমাম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় তাঁরা সবাই হতবাক হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক। তাঁরা সবাই বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়েছেন। লাশের সঙ্গে থাকা স্বজনেরা জানান, মর্গে ময়নাতদন্তের পর লাশ হস্তান্তর করা হবে। এরপর তাঁরা লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরবেন।

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, জমি ও মামলাসংক্রান্ত দ্বন্দ্বে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর লাশ বর্তমানে ওই হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত হিসেবে যাঁদের নাম এসেছে, তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। দ্রুত তাঁরা আইনের আওতায় আসবেন।