পবিত্র রমজান মাসে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টির আয়োজন না করার অনুরোধ জানিয়ে জারি করা বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে গণইফতার কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার রোজার প্রথম দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এই ইফতার পার্টি হয়েছে।
এর আগে রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট সবাইকে ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টির আয়োজন না করার অনুরোধ করা হয়। সোমবার বিষয়টি জানাজানি হলে নির্দেশনার সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই সরব হন। তাঁরা দ্রুত এ নির্দেশনা বাতিলের আহ্বান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওই নির্দেশনার প্রতিবাদে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে ‘গণইফতার কর্মসূচি’র আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ইফতারি নিয়ে গোলচত্বরে জড়ো হতে থাকেন। কর্মসূচিতে কয়েক শ শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁরা একসঙ্গে বসে রোজার প্রথম দিনটিতে ইফতার করেন।
গণইফতার কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বলেন, এক কাতারে বসে সবার ইফতার করাটা এক সম্প্রীতির সংস্কৃতি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন ইফতার পার্টি আয়োজন না করার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দিল, সেটা কারও পক্ষেই বোধগম্য হচ্ছে না।
ইফতার শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইফতার পার্টি একটা মুসলিম সংস্কৃতি। এটা ঐক্য ও সম্প্রীতি ছড়ায়। হুট করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হঠকারী সিদ্ধান্ত দিয়ে ইফতার পার্টি না করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়। এর প্রতিবাদেই আমরা মৌন কর্মসূচি পালন করেছি। ভবিষ্যতে যেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমন অবিবেচক সিদ্ধান্ত না নেয়, এর অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য মঙ্গলবার আরেকটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আগের বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত পরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রতিবছর রমজান মাসে ইফতার পার্টি আয়োজনে বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্থিক সহায়তা করা হতো। তবে এ বছর পবিত্র রমজান মাসে সরকারিভাবে বড় করে ইফতার পার্টি না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই পরিপ্রেক্ষিতে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ কমাতে এবারের রমজানে সংশ্লিষ্ট কাউকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট যে কেউ নিজেদের অর্থায়নে ইফতার পার্টির আয়োজন করতে পারবে।’
পরে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাড়া দেননি।