রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চন্দের বিরুদ্ধে পিএইচডি ডিগ্রি জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন তাঁর এক সহকর্মী। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বিনা ছুটিতে তিনি প্রায় ১১ মাস বিদেশে অবস্থান করেন এবং ওই সময়টাকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত দেখিয়ে বেতন-ভাতাদি নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আজ শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন আইন বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বজিৎ চন্দ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৪ বছর ১১ মাস ২৮ দিন পূর্ণ বেতনে এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ২ বছর ১০ মাস ২৯ দিন বিনা বেতনে লন্ডনের ‘সোয়াস’ এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ১০ মাস ২৯ দিন বিদেশে অবস্থান করেন। তবে ওই সময়টায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত দেখিয়েছেন। গবেষণাকর্মে নিয়োজিত দেখিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান।’
লিখিত বক্তব্য মোর্শেদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বিশ্বজিৎ চন্দ ‘সোয়াস’ থেকে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন মর্মে কাগজপত্র প্রদর্শন করে ২০১৮ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। পরে ২০২০ সালে তিনি ইউজিসির সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। তবে তাঁর জমাকৃত সোয়াসের প্রত্যয়নপত্রে দেখা যায়, পিএইচডি ডিগ্রি নয়, তিনি ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেছেন। অর্থাৎ বিশ্বজিৎ চন্দ পিএইচডি ডিগ্রি জালিয়াতির মাধ্যমে অধ্যাপক পদে পদায়ন নিয়েছেন।’
লিখিত বক্তব্য তিনি দাবি বলেন, পিএইচডি ডিগ্রি কার্যে ব্যয়িত ৬ বছর ১১ মাস ২৮ দিনের অনুমোদিত ছুটি তার অ্যাক্টিভ সার্ভিস থেকে কর্তন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে ১০ মাস ২৯ দিন কর্মহীন অবস্থায় বিদেশে অবস্থান করায় গৃহীত আর্থিক সুবিধা ফেরত দিতে হবে। সার্ভিস রুল অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া তাঁকে অবৈধ যোগদানে যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাঁর অধ্যাপক পদ বাতিল করে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’–এর সব কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বন্ধ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এসব ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।