বিদ্যালয়ের সামনে গাড়ির চাপায় ছাত্রের মৃত্যু, বাসে আগুন দিল বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা
বান্দরবানের রুমায় বিদ্যালয়ের সামনেই যাত্রীবাহী বাসের চাপায় মথি ত্রিপুরা (১০) নামের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার সময় বাসটি মথি ত্রিপুরাকে চাপা দেয়। স্কুলছাত্রের মৃত্যুর পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর বাসচালক সাইফুল ইসলামকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেন তাঁরা। বিকেলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশে বিদ্যালয়ের সামনে যাত্রীবাহী বাসসহ কোনো যানবাহন না রাখা, স্কুলছাত্র হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করা হয়।
স্থানীয় লোকজন ও রুমা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, দুপুর ১২টায় প্রথম শিফটের ছুটি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরছিল। ঠিক সেই সময়ে একটি যাত্রীবাহী বাস বান্দরবানের দিকে যাওয়ার জন্য মোড় ঘোরাচ্ছিল। বাসটি তখন প্রচণ্ড গতিতে ওই রাস্তায় থাকা শিক্ষার্থী মথি ত্রিপুরাকে ধাক্কা দিয়ে দেয়ালের সঙ্গে ঠেসে ধরে। এতে বাস ও দেয়ালের মাঝখানে চাপা পড়ে সে। বাসের ধাক্কায় মাথায় ও বুকে প্রচণ্ড আঘাতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
রুমা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংমং মারমা বলেন, নিহত মথি ত্রিপুরার বাড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে আনন্দপাড়ায়। সে একটি ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করত। মংমং ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যালয় থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে বেথেলপাড়া এলাকায় বাসস্ট্যান্ডের অবস্থান। কিন্তু যাত্রীবাহী বাসগুলো বিদ্যালয়ের সামনে পার্কিং করে যাত্রী ওঠানামা করে। শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকির কথা প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ সমাবেশ থেকেও যাত্রীবাহী বাস ও চাঁদের গাড়ি বিদ্যালয়ের সামনে থেকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার দাবি করা হয়।
রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহরাওয়ার্দী জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া যাত্রীবাহী বাসের চালক সাইফুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন। নিহত শিক্ষার্থীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। যাত্রীবাহী বাসসহ কোনো যানবাহন বাসস্ট্যান্ড ছাড়া এখন থেকে বিদ্যালয়ের সামনে ও অন্য কোথাও পার্কিং ও যাত্রী ওঠানামা না করার জন্য মালিক-শ্রমিক সমিতিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।