রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিল করার ঘোষণা উপাচার্যের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় কোনো পোষ্য কোটা থাকবে না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব। তিনি বলেছেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমি ১ শতাংশ পোষ্য কোটা রাখারও পক্ষে নই। আমি অঙ্গীকার করছি, এই পোষ্য কোটা রাখা হবে না। এই ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষেই এটি বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি বাতিল ঘোষণা করা হবে।’
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের উপাচার্যের কনফারেন্স কক্ষে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে উপাচার্য এসব কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য এ সিদ্ধান্ত নিলেন।
এর আগে রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য উপাচার্য সালেহ হাসান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ, ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলামসহ বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষরা প্রশাসন ভবনের ফটকে আসেন। এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৬ জন প্রতিনিধি তাঁদের আলোচনার জন্য প্রশাসন ভবনের কনফারেন্স কক্ষে যান। সভায় উপাচার্য পোষ্য কোটা বাতিলের নিশ্চয়তা দেন। পরে ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে অবরুদ্ধ থাকা দুই শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রায় ১২ ঘণ্টা পর সেখান থেকে মুক্ত হন। এ সময় শিক্ষার্থীরা একটি বিজয় মিছিল বের করেন।
পরে উপাচার্য, সহ-উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা প্রশাসন ভবন ত্যাগ করেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাঁদের কটাক্ষ করে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
এর আগে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন খানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
গত বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন প্রশাসন তা কমিয়ে ৩ শতাংশ করে। এরপর পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের মুখে গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছিল, শুধু কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা থাকবে।