সুন্দরবনের গরান কাঠ কাটার অনুমতি চেয়ে বাওয়ালিদের সংবাদ সম্মেলন
সুন্দরবনে অনেক বছর ধরে গরান কাঠ কাটা হয়নি এবং এতে বন গরানসমৃদ্ধ হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাওয়ালিরা। তাঁরা এখন সীমিত পরিসরে গরান কাঠ কাটার অনুমতির চেয়ে পূর্ব-পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জে আবেদন জানিয়েছেন। গতকাল রোববার বিকেল পাঁচটায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বাওয়ালিরা এ আবেদন জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুন্দরবন বনজীবী ব্যবসায়ী বাওয়ালি মালিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বদরুজ্জামান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পূর্ব-পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে গরান কাঠ কাটা সরকারিভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। ফলে গরান কাঠ কাটা বন্ধ। এতে সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকার জ্বালানিসংকট ও বনজীবীরা তাঁদের কর্মসংস্থান হারাচ্ছেন। বাওয়ালিদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি রাজস্ব বৃদ্ধিতে সীমিত আকারে গরান কাঠ সংগ্রহের অনুমতির জন্য বন বিভাগসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
বাওয়ালিদের দাবি, গরান কাঠ না কাটায় বনের গরানসমৃদ্ধ এলাকায় অন্য গাছের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। গরানগাছে বিস্তৃত থাকায় বনের ভেতরে বন্য প্রাণীর স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিবছর কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সুন্দরবনের গেওয়াখালী, পুষ্পকাটি, আগুনজ্বালা, দোবেকি, নোটাবেঁকি, কেওড়াসুতি, মরগখালী, চালকি, হংসরাজ, নীলকোমল এলাকা ঘুরে প্রচুর গরানগাছ দেখা গেছে। আগে বনে এত গরানের ঝাড় ছিল না। এখন গরান কাটার অনুমতি দিলে বনের কোনো ক্ষতি হবে না; বরং বনের অন্যান্য গাছ বাড়বে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সত্তরের দশকে সুন্দরবনে গরান, গোলপাতা, হেতাল, গেওয়া, সুন্দরী কাঠ কাটার অনুমতি দিত বন বিভাগ। নব্বইয়ের দশকে শুধু গরান ও গোলপাতা কাটার অনুমতি দেওয়া হয়। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর সুন্দরবনে আঘাত হানার পর ওই বছর সরকার গরান ও গোলপাতা কাটা নিষিদ্ধ করে দেয়। এর দুই বছর পর গোলপাতা কাটার অনুমতি দেওয়া হলেও গরান কাটার অনুমতি চালু করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন বনজীবী ব্যবসায়ী বাওয়ালি মালিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল আজিজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী, বাওয়ালি আবদুল হাই, নুর মোহাম্মদ, সিরাজুল ইসলাম, মফিদুল ইসলাম প্রমুখ।
পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা এম হাবিবুল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর ধরে বাওয়ালিরা গরান কাটার অনুমতি চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করে আসছেন। তবে গরান কাটার অনুমতির বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত।