শ্রীপুরে আগুনে পুড়ল মহুয়া ট্রেনের পাওয়ার কার, ২ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ

গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে মহুয়া কমিউটার ট্রেনের পাওয়ার কার বগিতে আগুন লেগে সব মালামাল পুড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সাতখামাইর রেলস্টেশনের পাশেছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ঢাকা ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেনের পাওয়ার কার বগি আগুনে পুড়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সাতখামাইর রেলস্টেশনের কাছে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

অগ্নিকাণ্ডে ট্রেনের মাঝামাঝি থাকা পাওয়ার কার বগির জেনারেটর ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়। খবর পেয়ে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভান। পরে বেলা একটার দিকে ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে। এর আগে বেলা ১১টা থেকে ২ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সাতখামাইর রেলস্টেশনের দক্ষিণ দিকে আউটার সিগন্যাল এলাকায় একটি বগি অন্যান্য বগি থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা। সেটি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। ওই বগির কিছুটা দক্ষিণ দিকে আরও কয়েকটি বগি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রেলপথের ওপর অপেক্ষা করছে। অন্যদিকে উত্তর প্রান্তে সাতখামাইর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মের কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে লোকোমোটিভ ও অন্যান্য বগিগুলো। সব বগিতে যাত্রী আছেন।

পুড়ে যাওয়া বগির ভেতরে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ভেতরে থাকা বড় জেনারেটর, সিলিং ফ্যানসহ সব যন্ত্রাংশ পুড়ে কালো হয়ে গেছে।

ট্রেনের যাত্রী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, তিনি আগুন লাগা বগির পেছনের বগির যাত্রী ছিলেন। হঠাৎ গাড়ির ভেতরের ফ্যান ও লাইট বন্ধ হয়ে যায়। এরপর পাশের বগি থেকে চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পান। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখেন একটি বগি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেনটি থেমে যায়। এর মধ্যে ওই বগিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। লোকজন এসে আগুন লাগা বগিটিকে অন্যান্য বগি থেকে আলাদা করে দেয়।

আরেক যাত্রী মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, জেনারেটর রুমে আগুন লাগার পর যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ট্রেন থামার পর প্রায় সব বগি থেকে যাত্রীরা বের হয়ে আসেন।

অগ্নিকাণ্ডে ট্রেনের মাঝামাঝি থাকা পাওয়ার কার বগির জেনারেটর ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়। পরে বেলা একটার দিকে ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে
ছবি: প্রথম আলো

সাতখামাইর এলাকার বাসিন্দা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, মানুষের চিৎকার শুনে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখতে পান ট্রেনে আগুন জ্বলছে। এরপর তাঁরা স্থানীয়ভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় স্থানীয় উদ্যোগে পুরো নেভানো যায়নি।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। জেনারেটর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত করে আরও বিস্তারিত বলা যাবে।’

শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. সাইদুর রহমান বলেন, মহুয়া কমিউটার ট্রেনের পাওয়ার কার বগিতে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় দুই ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বেলা একটার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত পাওয়ার কারটি নিয়ে ট্রেন গন্তব্যে যাত্রা করে।