রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্কাছের বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা
রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ভ্যাট ও আয়করের ২২ লক্ষাধিক টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে গতকাল রোববার বিকেলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দুটি করেন কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. বোরহান উদ্দিন।
মামলায় আক্কাছ আলীর সঙ্গে সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলীকে আসামি করা হয়েছে। লিয়াকত আলী বর্তমানে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সাতক্ষীরা পৌরসভায় কর্মরত। অপর মামলায় আক্কাছ আলীর সঙ্গে মাইনুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক ইজারাদারকে আসামি করা হয়েছে। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক ফজলুল বারী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রথম মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৮০ টাকা আয়কর ও ভ্যাট বাবদ কেটে নেওয়ার নামে ট্রেজারি চালানের পাতায় ও চেকের পাতায় স্বাক্ষর করে রাখা হয়েছে। কিন্তু সরকারি কোষাগারে ওই টাকা জমা দেওয়া হয়নি। এ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক মেয়র আক্কাছ ও সাবেক পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলীকে আসামি করা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে সিএনজি, ট্যাম্পু, ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের টোল আদায়ের জন্য ইজারার দরপত্র আহ্বান করা হয়। ইজারার সম্পূর্ণ অর্থ আদায় না করে মাইনুল ইসলামকে ওই স্ট্যান্ড থেকে টোল আদায়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ১০ লাখ ৪৯ হাজার টাকা পৌর তহবিলে জমা না করার অভিযোগে সাবেক মেয়র ও ইজারাদারের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক ফজলুল বারী বলেন, মামলা দুটি করার পর অনুলিপি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এখন মামলার তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে আক্কাছ আলী বলেন, ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মেয়র থাকার সময় ভ্যাট-আয়কর দেওয়ার জন্য হিসাবরক্ষক তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন সময় চেকে স্বাক্ষর নেন। পরে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে কি না, তা তাঁকে জানানো হয়নি। যেহেতু তাঁকে দিয়ে সই করানো হয়েছিল, তাই তিনি ধরেই নিয়েছিলেন যে টাকা জমা হয়েছে। এখন দুদক বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করলে তিনি জানতে পারেন যে ওই টাকা আসলেই ব্যাংকে জমা হয়নি। তিনি বলেন, মেয়র কখনো টাকা জমা দিতে যান না। কর্মচারীরাই দেন। তাঁর টাকা আত্মসাৎ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
ইজারার সম্পূর্ণ টাকা আদায় না করার বিষয়ে আক্কাছ আলী বলেন, ‘ইজারার টাকা পর্যায়ক্রমেই আদায় করা হয়। পুরো টাকা আদায়ের আগেই আমার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদেরই এ টাকা আদায়ের দায়িত্ব ছিল। টাকা আদায় না হওয়ায় আমি দায়ী নই।’