সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ‘প্রেমচাঁদ’ ফেলোশিপ পেলেন সফিকুন্নবী সামাদী
বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদীকে ‘প্রেমচাঁদ’ ফেলোশিপ প্রদান করেছে ভারতের সাহিত্য একাডেমি। সফিকুন্নবী সামাদী একাধারে গবেষক, অনুবাদক ও শিল্প-সাহিত্যের মননশীল পত্রিকা নিরিখ–এর সম্পাদক।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বায়ত্তশাসিত এ প্রতিষ্ঠানটি ভারতের হিন্দি ও উর্দু ভাষার প্রখ্যাত লেখক প্রেমচাঁদের নামে ২০০৫ সাল থেকে সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে প্রতিবছর যেকোনো একজন লেখককে ফেলোশিপ প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশ থেকে ২০০৯ সালে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে এবং ২০১০ সালে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে এ ফেলোশিপ প্রদান করা হয়েছিল।
গত ২৫ জুলাই বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার মাধ্যমে সাহিত্য একাডেমির সেক্রেটারি শ্রীনিবাসরাও সফিকুন্নবী সামাদীকে ফেলোশিপের অফার লেটার পাঠান। এতে সফিকুন্নবী সামাদী সম্মতি প্রদান করেন। গতকাল ১৯ নভেম্বর সফিকুন্নবী সামাদীকে প্রেমচাঁদ ফেলোশিপ প্রদান উপলক্ষে দিল্লিতে সাহিত্য একাডেমি মিলনায়তনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন শ্রীনিবাসরাও এবং ফেলোশিপ প্রদান করেন সাহিত্য একাডেমির প্রেসিডেন্ট মাধব কৌশিক। এ সময় সম্মাননা, পদক ও ফেলোশিপের নির্ধারিত সম্মানী প্রদান করা হয়।
ফেলোশিপের কর্মসূচি থেকে জানা যায়, প্রেমচাঁদ ফেলোশিপের আওতায় সফিকুন্নবী সামাদী দিল্লি ছাড়া সাহিত্য একাডেমির মুম্বাই ও কলকাতা শাখায় তিনটি বক্তৃতা করবেন। এর মধ্যে মুম্বাইয়ে বাংলা ভাষা আন্দোলন-বিষয়ক কবিতার নিজস্ব হিন্দি অনুবাদ এবং কলকাতায় প্রগতিশীল উর্দু কবিতার বাংলা অনুবাদ বিষয়ে তিনি বক্তৃতা করবেন।
পিএইচডি গবেষণায় বাংলা ঔপন্যাসিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং উর্দু-হিন্দি ঔপন্যাসিক মুনশি প্রেমচন্দের তুলনামূলক অধ্যয়ন করেছেন সফিকুন্নবী সামাদী। উর্দু-হিন্দি সাহিত্য থেকে বাংলায় অনুবাদ করছেন নিয়মিত। অনুবাদের ক্ষেত্রে তিনি বেছে নেন প্রগতিশীল চিন্তার কবি, নাট্যকার কিংবা কথাসাহিত্যিক। মূল উর্দু ও হিন্দি থেকে বাংলায় প্রকাশিত তাঁর অনুবাদগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গুলযারের ত্রিবেণি (উর্দু কাব্য), মীনা কুমারীর কবিতা (উর্দু), মৃত্যুঞ্জয় প্রভাকরের খোয়াহিশেঁ (হিন্দি নাটক), কৃষণ চন্দরের উল্টো গাছ (উর্দু আখ্যান), হাবীব জালিবের কবিতা (উর্দু), ইসমত চুগতাইয়ের নির্বাচিত গল্প (উর্দু), অমৃতা প্রীতমের নির্বাচিত গল্প (হিন্দি), অজয় শুক্লার তাজমহলের টেন্ডার (হিন্দি নাটক), কিশওয়ার নাহীদের নির্বাচিত কবিতা (উর্দু) প্রভৃতি।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দিল্লি থেকে অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, ‘কাজের জন্য কোনো সম্মান বা পুরস্কার পেলে ভালো লাগে। আমার কাজকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে, সেটা অবশ্যই আনন্দের। সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ববোধ করছি সারা জীবন কাজ করে যাওয়ার, কাজের মাধ্যমে মানুষকে মানুষের সঙ্গে সংযুক্ত করার।’