আচরণবিধি ভেঙে মেয়র-কাউন্সিলরদের কাছে ভোট চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সিলেটে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রতীক বরাদ্দের আগেই মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে নৌকায় ভোট চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। শনিবার বেলা ১১টায় নগরের ধোপাদীঘির পাড় এলাকার হাফিজ কমপ্লেক্সে ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নিজেকে ও দলকে জেতাতে মেয়র ও কাউন্সিলরদের সহযোগিতা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০০৮-এর ১২ ধারা অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা দল মনোনীত ব্যক্তি বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাঁদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ আগে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না।
সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মোমেন। তিনি এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সভার ব্যানারে লেখা ছিল, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এমপির সঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও কাউন্সিলরদের মতবিনিময় সভা’। সভায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ২০ জনের বেশি কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মিণী সেলিনা মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত অন্তত তিনজন কাউন্সিলর ও দুজন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামনে নির্বাচনের বিষয়ে সভা ডেকেছিলেন। এটিকে নির্বাচনী মতবিনিময় সভা বলছেন তাঁরা। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনেয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁরা অংশ নেন। সভায় চা, শিঙাড়া ও পেয়ারা খাওয়ানো হয়।
কাউন্সিলররা বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচনে তাঁকে জয়ী করতে ভোট চেয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের ওয়ার্ড পর্যায়ে তাঁর পক্ষে ভোটারদের কাছে প্রচারণা চালানোর ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়েছেন। এ ছাড়া প্রচারণা যাতে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছায়, এ ব্যাপারে লক্ষ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁরাও তাঁর পক্ষে কাজ ও প্রচারণা চালানোর কথা দিয়েছেন। তবে বিষয়টি নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে কি না, তাঁরা বুঝতে পারেননি।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দাবি করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় যাননি। তিনি (মন্ত্রী) সিলেটে আসায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি।
জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাছরীন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, এমন কোনো মতবিনিময় সভার ব্যাপারে তিনি জানেন না।