নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে গরু ব্যবসায়ীর গোড়ালি বিচ্ছিন্ন
পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে একজন গরু ব্যবসায়ীর বাঁ পায়ের গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
আজ শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের জামছড়ি সীমান্তের ৪৫ নম্বর বিওপি (বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট) পিলার এলাকায় এ স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
পা হারানো ব্যক্তির নাম মো. গোলাম আকবর (২৫)। তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের জামছড়ি গ্রামের ছৈয়দ আজিমের ছেলে।
গোলাম আকবর মিয়ানমার থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে চোরাই পথে গরুর এনে বিক্রি করতেন বলে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, জামছড়ি এলাকাটি নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এবং উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে। জামছড়ি বিওপির বিপরীতে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যের সালিডং এলাকা। সেখানে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) একটি চৌকি রয়েছে। সীমান্ত পার হয়ে মিয়ানমারের ভূখণ্ডের সামান্য ভেতরে মাইন বিস্ফোরণে গোলাম আকবর আহত হন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাজাহান প্রথম আলোকে বলেন, মাইন বিস্ফোরণে আহত গোলাম আকবরকে তাঁর স্বজনেরা চিকিৎসার জন্য কক্সবাজারে নিয়ে গেছেন। তিনি সম্ভবত সীমান্তের ওপারে গরু আনার জন্য গিয়েছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি বলেন, বিস্ফোরণে গোলাম আকবরের বাঁ পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সঙ্গে থাকা কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী তাঁকে উদ্ধার করে কক্সবাজার নিয়ে গেছেন। নাইক্ষ্যংছড়ি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শনিবার সকালে মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে চোরাই গরু আনতে যান গোলাম আকবর। বেলা আড়াইটার দিকে দুটি গরু নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করছিলেন তিনি। এ সময় একটি গরু একদিকে দৌড় দিলে সেটিকে ধরতে গিয়ে মিয়ানমার বাহিনীর পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে আকবরের বাঁ পায়ের গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং অপর পা ক্ষতবিক্ষত হয়।
পুলিশ ও এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ৪৪ নম্বর পিলারের কাছে জামছড়ির সাপমারাঝিরি এলাকায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে আরেক ব্যক্তির বাঁ পা বিচ্ছিন্ন হয়।
নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গাদের সম্প্রতি উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তর করা হলেও ওই পথে গরু ব্যবসায়ীদের যাতায়াত রয়েছে। গত দেড় মাসে বিজিবি অন্তত আট শতাধিক গরু-মহিষ জব্দ করে।