মেঘনায় অভিযানের সময় হামলা, মৎস্য কর্মকর্তাসহ আহত ১৬
বরিশালের হিজলা উপজেলায় ইলিশ ধরা বন্ধে অভিযান চালানোর সময় জেলেদের হামলায় মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা, নৌ পুলিশের পরিদর্শকসহ অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার ধূলখোলা–সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত ১৬ জনকে হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে হিজলা নৌ পুলিশের পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র অবস্থা গুরুতর।
হিজলা উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা এস এম পারভেজ জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তাঁরা নৌ পুলিশের সদস্যদের সহায়তা নিয়ে মেঘনা নদীতে অভিযানে নামেন। সন্ধ্যায় ছয়টার দিকে ধূলখোলা এলাকার মেঘনা নদীতে পৌঁছালে ৫০ থেকে ৬০ জন জেলে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে এসে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় আত্মরক্ষার্থে নৌ পুলিশ সদস্যরা সাতটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে জেলেদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। হামলায় ও ইটের আঘাতে তিনিসহ অভিযানে অংশ নেওয়া অন্তত ১৬ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে নৌ পুলিশের পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দে গুরুতর আহত হন। তাঁর মাথার আঘাত গুরুতর। রাত সোয়া আটটার দিকে আহত ব্যক্তিদের হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা কাজী রুবাইয়া বলেন, পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দের মাথায় ছয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। অন্যদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারেক হাওলাদার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইউনুস মিঞা হাসপাতালে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা কার্যক্রম তদারকি করছেন।
মো. তারেক হাওলাদার বলেন, ‘আমরা আহত ব৵ক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মৎস্য বিভাগ জানায়, দেশের ইলিশ সম্পদ সুরক্ষায় ১ মার্চ থেকে মেঘনা নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় অভয়াশ্রমসহ উপকূলের পাঁচটি ইলিশ অভয়াশ্রমে দুই মাস সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। কিন্তু এসব নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অসাধু জেলেরা দিন-রাত মেঘনার এই অভয়াশ্রমে জাল ফেলে মাছ শিকার করছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা–সংলগ্ন মেঘনা নদীর বিভিন্ন অংশে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মাছ ধরা অবস্থায় ২১ জন জেলেকে আটক করেন নৌ পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা। জব্দ করা হয় ৫০ হাজার মিটার জাল। পরে তাঁদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির করা হয়। পরে ইউএনও মো. নুরুন্নবী তাঁর কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ২০ জেলেকে ২০ দিন করে কারাদণ্ড দেন এবং একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ২০ জেলেকে আজ শুক্রবার বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার পর আজ সন্ধ্যায় জেলেরা মেঘনায় এ হামলা চালান।