‘ইয়াবা–কাণ্ডে’ সম্পৃক্ততার অভিযোগে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ রহমত উল্লাহর পর এবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলমসহ সাতজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বুধবার পুলিশের সাত সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াবা–কাণ্ডের ঘটনায় সাতজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। এ জন্য পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।
প্রত্যাহার করা পুলিশ সদস্যরা হলেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম, এসআই সমীন গুহ, কনস্টেবল জাহিদুল ইসলাম, সাইফুল হাসান,
মো. রেজাউল করিম খান, মোহাম্মদ ইরফান ও কনস্টেবল (ড্রাইভার) রিয়াজ উদ্দিন।
এর আগে গত সোমবার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহকে প্রত্যাহার করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে সংযুক্ত করা হয়। ওই দিন পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন) কাজী মো. ফজলুল করিম স্বাক্ষরিত এক স্মারকে পুলিশ সুপারকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার কাছে দায়িত্বভার অর্পণ করে পুলিশের সদর দপ্তরে রিপোর্ট করতে বলা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন কক্সবাজারে নিয়োগ পান পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ।
উল্লেখ্য, সোমবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মিলেমিশে সাড়ে ৩ লাখ পিস বিক্রি-এসপির ইয়াবা কারবার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে জব্দ করা ইয়াবা থেকে সাড়ে তিন লাখ আত্মসাৎ, টাকা ভাগাভাগি, সোর্স নামধারী চাকরিচ্যুত দুই কনস্টেবলকে ঘুষের ভাগ হিসেবে ১ লাখ ৩০ হাজার ইয়াবা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ জানুয়ারি ভোরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) চকরিয়ার ডুলাহাজারা এলাকা থেকে ৪ লাখ ৯০ হাজার ইয়াবাসহ টয়োটা কোম্পানির ল্যান্ড ক্রুজার জব্দ করা হয়। গাড়িতে থাকা চারজনকে আটক করে ডিবির পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম ও এসআই সমীর গুহর নেতৃত্বাধীন একটি দল। এ সময় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে আটক তিন ইয়াবা কারবারিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় এসআই সমীর গুহ বাদী হয়ে গাড়িচালক ইসমাইলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চকরিয়া থানায় ১ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবা জব্দের মামলা করেন। উদ্ধার ইয়াবা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজারটি আত্মসাৎ করা হয়।
জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের শীর্ষ পদের একজন কর্মকর্তাসহ আটজন ইয়াবা-কাণ্ডে জড়িত থাকার ঘটনায় পুরো পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ও সম্মানহানি ঘটেছে।