দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কাশিমপুর কারাগারে বাড়তি নিরাপত্তা
পুরান ঢাকার আদালত এলাকা থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে কারাগারের প্রধান ফটকে গিয়ে আরপি চেকপোস্টে দায়িত্বে থাকা কারারক্ষীদের ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে সেখানে জনবলও বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন কারাগার এলাকা নজরদারি রাখছেন বলে জানা গেছে।
কারাগারের আরপি চেকপোস্টে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কারারক্ষী এম এইচ রানা বলেন, গতকালের ওই ঘটনার পর থেকে কাশিমপুর কারাগারে প্রবেশের সময় দর্শনার্থীদের তল্লাশি করা হচ্ছে। এ ছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
এর আগে গতকাল রোববার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার–২ থেকে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) হেফাজতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়েছিল। দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশ সদস্যদের চোখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মইনুল হোসেন শামীম ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। মইনুল হোসেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা ও আবু ছিদ্দিক লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেটোশ্বর গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ ও আদালত সূত্র জানান, পালিয়ে যাওয়া দুজন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি গোলাম সারোয়ার খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতে শুনানি শেষে এ দুজনকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, রোববারের ঘটনায় গাজীপুর মহানগর পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তারপরও তাঁরা বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছেন। এ ছাড়া কাশিমপুর কারাগার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২–এর ডেপুটি জেল সুপার আলি আফজাল বলেন, ‘আমাদের কারাগারে সব সময় নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে। তবে রোববারের ঘটনার পর নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে আরপি চেকপোস্টে ৫ থেকে ৬ জন দায়িত্বে থাকলেও এখন ১০ জন নিয়োজিত। কারাগারে আসামি পাঠানোর ক্ষেত্রেও বিশেষ নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।’