জাহাঙ্গীরনগরে শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, একজনকে আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা হয়েছে। হত্যা মামলাটিতে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছ আশুলিয়া থানা-পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার সুদীপ্ত শাহীন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের আহসান লাবিব, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের রাজু আহাম্মদ, ইংরেজি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের মাহমুদুল হাসান রায়হান, ইতিহাস বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের জুবায়ের আহমেদ, ইংরেজি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের হামিদুল্লাহ সালমান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের মো. আতিকুজ্জামান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের সোহাগ মিয়া, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাজন মিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। শামীম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ওই আট শিক্ষার্থীকে গতকাল সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাবীবুন নবী নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাঁর বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বুধবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক ফটকে এলে কয়েকজন ব্যক্তি তাঁকে মারধর করেন। খবর পেয় প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রক্টরের কার্যালয়ে নিয়ে যান। আহত শামীমকে প্রক্টর কার্যালয়ের একটি কক্ষে রেখে প্রক্টর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আশুলিয়া থানা-পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। এর মধ্যে কতিপয় ব্যক্তি প্রক্টরিয়াল টিমকে না জানিয়ে জোর করে শামীম মোল্লাকে প্রক্টর কার্যালয়ের পাশে নিরাপত্তা কার্যালয়ে নিয়ে যান। প্রক্টর বিষয়টি জানতে পেরে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের সেখান থেকে সরিয়ে দিয়ে নিরাপত্তা কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে দেন। পরে সেখানে নিরাপত্তাকর্মীদের পাহারায় রেখে প্রক্টরের কার্যালয়ে ফিরে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর মধ্যে পুনরায় কয়েকজন উত্তেজিত হয়ে নিরাপত্তা কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে শামীম মোল্লাকে আবারও মারধর করেন।
এজাহারে বলা হয়, পরে প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তারা শামীম মোল্লার সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের থামান। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশ সদস্যরা এসে জানান, শামীমের নামে একাধিক মামলা আছে। রাত আটটার দিকে শামীমকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। আশুলিয়া থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে শামীমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাত নয়টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। উল্লিখিত ঘটনায় আহসান লাবিব, রাজু আহাম্মদ, মাহমুদুল হাসান রায়হান, জুবায়ের আহমেদ, হামিদুল্লাহ সালমান, মো. আতিকুজ্জামান, সোহাগ মিয়া, মোহাম্মদ রাজন মিয়াসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২০-২৫ জনের সম্পৃক্ত ছিলেন।
মামলা ও এক ব্যক্তিকে আটকের বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক। তিনি জানান, এ ঘটনায় একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল রাত তিনটার দিকে ধামরাই পৌরসভা এলাকা থেকে থানায় আনা হয়েছে।