নওগাঁয় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত ১৩
নওগাঁয় কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিক, পুলিশসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নওগাঁ শহরের সরিষাহাটির মোড় এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের কাজির মোড় এলাকায় দুপুর ১২টার দিকে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের মুক্তির মোড়ের দিকে এগোতে থাকেন। এই মিছিলের আশপাশে পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন।
মিছিলটি মুক্তির মোড় হয়ে সরিষাহাটির মোড়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। এরপর শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ইটের আঘাতে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজের নওগাঁ প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম শামীমসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন।
একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীরা আবার মুক্তির মোড়ে অবস্থান নিয়ে সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। শিক্ষার্থীরা রাস্তার ওপর বসে পড়ে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। বেলা দেড়টার দিকে পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে চলে যান।
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক লায়লা আক্তার বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত ১৩ জন হাসপাতালে আসেন। তাঁদের সবার মাথায় ইটের আঘাতের জখম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
নওগাঁর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, ‘মিছিলের শুরু থেকেই পুলিশ সহনশীল আচরণ করেছে। শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে জন্য তাদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। কিন্তু মিছিলটি আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসের কাছে পৌঁছালে মিছিল থেকে কিছু দুষ্কৃতকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। এর পরই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। ইটের আঘাতে এএসপি গাজিউর রহমানের হাত ভেঙে গেছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’