১৫ বছর পর নিকলী উপজেলা বিএনপির সম্মেলন, বদরুল সভাপতি, আতিকুল সম্পাদক
দীর্ঘ ১৫ বছর পর উৎসবমুখর পরিবেশে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নিকলী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়।দিনব্যাপী দলীয় নানা কর্যক্রম চলে। সন্ধ্যার পর কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে বদরুল মোমেন সভাপতি ও আতিকুল ইসলাম তালুকদার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন। সম্মেলন উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক আহ্বায়ক বদরুল মোমেনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মানিক মিয়ার সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুক মিয়া, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাইল মিয়া ও আমিনুল ইসলাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুব আলম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির ভাষণে শাহ ওয়ারেছ আলী বলেন, ‘মানুষ যখন নির্বাচনের স্বপ্ন দেখছে, তখন পতিত সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন; বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বিপন্ন করার জন্য পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছেন। ১৭ বছরে অনেক জীবনের বিনিময়ে শেখ হাসিনার দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের কোনো ভুলের কারণে যদি ষড়যন্ত্র এই দেশের মাটিতে বাস্তবায়ন হয়, আমরা ব্যর্থ হই, তাহলে এই জাতির ভাগ্যে করুণ পরিণতি অপেক্ষা করছে।’
গতকাল বেলা দুইটার দিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যের মাধ্যমে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হয়। পরে অতিথিরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের সম্মেলন মঞ্চে ডেকে এনে আলোচনা করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রায় আধা ঘণ্টা আলোচনা করেও প্রার্থীদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। নিকলী উপজেলা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ কাউন্সিলর কয়েক সারিতে দাঁড়িয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হয়। এতে দেখা যায়, বদরুল মোমেন ২২৯ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ২১০ ভোট। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আতিকুল ইসলাম তালুকদার। তিনি পেয়েছেন ১৮৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আইনজীবী জিল্লুর রহমান পেয়েছেন ৮১ ভোট। সভাপতি পদে চারজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল। সকাল থেকেই ঢাকঢোল বাজিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সম্মেলনে সরব ছিলেন। এর আগে ২০০৯ সালে সর্বশেষ নিকলী উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।