মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে গাড়িতেই মারা গেলেন ক্যানসারে আক্রান্ত ছেলে

সাদেকুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

বয়োবৃদ্ধ মাকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেখে নিজের চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন ক্যানসারে আক্রান্ত সাদেকুল ইসলাম। পথিমধ্যে জানতে পারেন, মা মারা গেছেন। এরপর নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ঘটনা। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে মা কদবানু (৮৫) ও বেলা দুইটার দিকে ছেলে সাদেকুল (৬৮) মারা যান। মা-ছেলের মর্মান্তিক এ মৃত্যুতে বাড়িতে চলছে মাতম, গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

কদবানু বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর ছেলে সাদেকুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। সাদেকুল দীর্ঘদিন ধরে লিভার ক্যানসারে ভুগছিলেন। ১৫ দিন পরপর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতেন সাদেকুল। ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকায় থাকলেও সাদেকুল আত্মগোপনে ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মোসাম্মত কদবানু বার্ধক্যের কারণে আজ সকাল ১০টার দিকে মারা যান। এর আগে সকাল নয়টার দিকে লিভার ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন সাদেকুল। ঢাকার ৩০০ ফুট সড়ক এলাকায় পৌঁছালে সাদেকুলের সঙ্গে থাকা স্বজনেরা কদবানুর মৃত্যুর সংবাদ পান। মৃত্যুর সংবাদ শুনে গাড়িতে থাকা স্বজনেরা কান্নাকাটি শুরু করেন। স্বজনদের কান্না দেখে মায়ের মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে সাদেকুল গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেলা দুইটার দিকে স্বজনেরা সাদেকুলকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যার দিকে স্বজনেরা সাদেকুলের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুরে জোহর নামাজের পর চম্পকনগর কলেজ মাঠে মা-ছেলের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

সাদেকুল দুই ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর বড় ছেলে প্রকৌশলী শরীফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবা দীর্ঘদিন ধরে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ১৫ দিন পরপর ঢাকায় চিকিৎসার জন্য যান। আজ সকালে চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। ৩০০ ফুট পৌঁছার পর সঙ্গে থাকা ফুফাতো ভাই সংবাদ শুনে কান্নাকাটি করেন। তা দেখে দাদি মারা গেছেন বুঝতে পেরে বাবাও সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন।’