ভোলার ৫ উপজেলায় বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নাকচ
ভোলার পাঁচটি উপজেলায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তাঁদের দাবি, হামলায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তবে গ্রেপ্তার বা আবার হামলা এড়াতে আহত ব্যক্তিরা কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যাননি।
আওয়ামী লীগের নেতারা দাবি করেছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ সত্য নয়। তবে শান্তি সমাবেশের জন্য মাঠে আছেন তাঁরা। পুলিশও জানিয়েছে, এ ধরনের কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।
ভোলার মনপুরা উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিলন মাতব্বর প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট বাজারের উত্তর মাথা থেকে হাজিরহাট ইউনিয়ন বিএনপি পদযাত্রা বের করে দক্ষিণে যায়। এতে ২০০ নেতা-কর্মী অংশ নেন। পদযাত্রা শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগের কর্মীরা হাজিরহাট ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইউনুসকে হাজিরহাট বাজারে ও যুবদল নেতা মাকসুদুর রহমানকে বান্দেরহাট এলাকায় পিটিয়ে জখম করেন। তাঁরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মনপুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আক্তার দাবি করেন এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি বলেন, বিএনপি কোনো পদযাত্রা বের করেছে কি না, তা তাঁদের জানা নেই। হামলার প্রশ্নই আসে না। তবে আওয়ামী লীগ শান্তি মিছিলের ডাক দিয়েছে। তাঁরা মাঠে আছেন।
তজুমদ্দিন উপজেলার যুবদলের সভাপতি নাসির উদ্দিন দুলাল অভিযোগ করেন, উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের আড়ালিয়া থেকে সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিএনপি একটি পদযাত্রা বের করে। পদযাত্রাটি সম্ভুপুর ইউনিয়নের ভুবনঠাকুর বাজার পর্যন্ত গিয়ে ফেরার পথে হামলার শিকার হয়। আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তি সমাবেশে যোগ দেওয়ার নাম করে মিছিল বের করে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ৪৫ জনকে আহত করা হয়েছে। আটক হওয়ার আতঙ্কে কেউ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেননি। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
তজুমদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক দেওয়ান বলেন, ‘বিএনপির কাউকে পদযাত্রায় অংশ নিতেই দেখিনি। তাহলে হামলা করব কার ওপর। তবে শুনেছি, বিএনপি একত্র হয়ে পদযাত্রার ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছে।’
এই এলাকায় হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদুর রহমান।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক মো. সরোয়ার আলম অভিযোগ করেন, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার পক্ষিয়া ও সাচড়া ইউনিয়নে পদযাত্রা বের করে বিএনপি। এ সময় আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা করে সাচড়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সহসভাপতি মিরাজ শরীফ, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন এবং পক্ষিয়া যুবদলের সহসভাপতি মো. ফরিদকে পিটিয়ে আহত করেছেন। তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তবে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিরুপম সরকার বলেন, শনিবার সাড়ে ১০টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এমন কোনো রোগী ভর্তি হননি বা প্রাথমিক চিকিৎসা নেননি।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কোনো পদযাত্রা বের করেনি। আর কেউ হামলাও করেনি। বিএনপির দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। একই কথা বলেন বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন মিয়া।
এ ছাড়া ভোলা সদর উপজেলা এবং দৌলতখান উপজেলা বিএনপির নেতারাও তাঁদের এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।