ময়মনসিংহ বোর্ডে পাসের হার চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন, আইসিটিতে অকৃতকার্য বেশি
ময়মনসিংহ বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় এবার পাসের হার কমেছে। চলতি বছর পাসের হার ৬৩ দশমিক ২২, যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে ফলাফল বিপর্যয়কে দায়ী করেছে শিক্ষা বোর্ড।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শিক্ষা বোর্ডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু তাহের। এর আগে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন তিনি। ময়মনসিংহ বোর্ডে জিপিএ-৫ ও পাসের হারে এগিয়ে আছেন মেয়েরা।
চলতি বছর ময়মনসিংহ বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিলেন ৭৭ হাজার ৬২১ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩৭ হাজার ৪৫৩ ও ছাত্রী ৪০ হাজার ১৬৮ জন। পরীক্ষায় পাস করেছেন ৪৯ হাজার ৬৯ জন; পাসের হার ৬৩ দশমিক ২২। এর মধ্যে ছাত্র পাস করেছেন ২২ হাজার ৯৩৫ জন এবং পাসের হার ৬১ দশমিক ২৪ শতাংশ। আর ছাত্রী পাস করেন ২৬ হাজার ১৩৪ জন এবং তাঁদের পাসের হার ৬৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
শিক্ষা বোর্ডটিতে জিপিএ–৫ প্রাওয়া মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ হাজার ৮২৬। তাঁদের মধ্যে ২ হাজার ১০৯ জন ছাত্র ও ২ হাজার ৭১৭ জন ছাত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার এইচএসসি পরীক্ষায় ২৯৫টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৯৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন। বোর্ডটির অধীন শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ এবং শতভাগ অকৃতকার্য প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪।
শাখাভিত্তিক পাসের হার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিজ্ঞান শাখা থেকে ৮৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, মানবিক শাখায় ৫৮ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৫০ দশমিক ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। পাসের হারের দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে জামালপুর জেলা। জেলাভিত্তিক পাসের হারে জামালপুরে ৬৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৬৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ, নেত্রকোনায় ৬২ দশমিক ৯০ শতাংশ ও শেরপুরে ৫৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।
ফলাফল ঘোষণার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা বোর্ডের সচিব সফিউদ্দিন সেখ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শামছুল ইসলাম।
ইংরেজি ও আইসিটিতে অকৃতকার্য বেশি
চলতি বছর ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৩ দশমিক ২২। অথচ এর আগের বছরগুলোয় এ হার তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। ২০২৩ সালে পাসের হার ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ, ২০২২ সালে ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং ২০২১ সালে পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৭১।
শিক্ষা বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৭৭ হাজার ৬২১ জন। এর আগের বছর ৭৫ হাজার ৮৪৫ জন, ২০২২ সালে ৬১ হাজার ৫১৪ জন, ২০২১ সালে ৬৯ হাজার ২৫০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। চলতি বছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৮২৬ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ২৪৪। অন্যদিকে ২০২২ সালে জিপিএ–৫ পেয়েছিলেন ৫ হাজার ২৮ জন এবং ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৬৮৭।
ফলাফল নিম্মমুখী হওয়ার কারণ হিসেবে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের প্রথম আলোকে বলেন, ‘চলতি বছরের ফলাফলে আমরা দেখেছি, ইংরেজি ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খারাপ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে আইসিটি পরীক্ষায় অকৃতকার্যের সংখ্যা বেশি। বিশেষ করে মানবিক শাখার শিক্ষার্থী ও প্রান্তিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আইসিটিতে দুর্বল থাকার কারণে বেশি অকৃতকার্য হয়েছেন। মানবিকে পাসের হার একেবারে কমে গেছে। আইসিটির কারণে বিপর্যয় ঘটেছে। বিজ্ঞানে পাসের হার সন্তোষজনক।’
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে জানিয়ে আবু তাহের আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও আরও দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য সুপারিশ পেশ করব।’