কুমিল্লায় চার বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড

ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেহরাজ হোসেনকে কারাগারে নেওয়া হয়। আজ বুধবার কুমিল্লা আদালতেছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লার সদর দক্ষিণে চার বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার ছয় বছর পর এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মেহরাজ হোসেন ওরফে তুষার নামের ওই যুবককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ে মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচার পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীরা।

কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক নাজমুল হক শ্যামল আজ বুধবার বিকেলে এ রায় দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মেহরাজ হোসেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মেয়ে হত্যার বিচারের জন্য আমি আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরেছি। অবশেষে আমার মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। এতে আমি সন্তুষ্ট। আমি দ্রুত রায় কার্যকর চাই।
নিহত শিশুর মা

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর চকলেটের লোভ দেখিয়ে চার বছর বয়সী ওই শিশুকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে পাশের একটি নির্মাণাধীন বাড়ির কার্নিশে সিমেন্টের ব্যাগে মুড়িয়ে রাখেন মেহরাজ। দীর্ঘ সময় মেয়েকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিবারের লোকজন। পরে শিশুটির সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। পরদিন সকালে মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ওই শিশুর দাদা বাদী হয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘটনার ১৪ দিন পর পুলিশ মেহরাজ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। দীর্ঘ ছয় বছরের বেশি সময় পর আজ কুমিল্লা নারী ও শিশু ট্র্যাইব্যুনাল-১–এর বিচারক মামলার একমাত্র আসামি মেহরাজের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মুহাম্মদ বদিউল আলম বলেন, এ মামলায় ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আসামি মেহরাজ জবানবন্দিতে ওই শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

শিশুটির মা বলেন, ‘মেয়ে হত্যার বিচারের জন্য আমি আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরেছি। অবশেষে আমার মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। এতে আমি সন্তুষ্ট। আমি দ্রুত রায় কার্যকর চাই।’