রংপুরে সম্পত্তির খোঁজ নিতে গিয়ে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ এরিক এরশাদের
জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ট্রাস্টের সম্পত্তির খোঁজখবর নিতে এসে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এরিক এরশাদ ও তাঁর মা বিদিশা এরশাদ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রংপুর নগরের দর্শনা এলাকায় পল্লীনিবাস বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন এরিক এরশাদ। এ সময় পাশে ছিলেন বিদিশা এরশাদ।
সংবাদ সম্মেলনে এরিক এরশাদ বলেন, তাঁর ভরণপোষণের জন্য বেশ কিছু সম্পদ ট্রাস্টের নামে করে যান বাবা এইচ এম এরশাদ। এর মধ্যে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জে পল্লীবন্ধু কোল্ড স্টোরেজও রয়েছে। তবে এই হিমাগারের ৩০ শতাংশ শেয়ার দেওয়া হয় বাবার (এরশাদ) চাচাতো ভাই সামছুজ্জামান মুকুলের নামে। বাবার মৃত্যুর পর ট্রাস্টের অধীন হিমাগারটি পরিচালিত হলেও তিনি এর লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত। সামছুজ্জামান ও স্থানীয় ব্যক্তি আবদুল বারী মুন্সি এটি দেখভাল করে থাকেন।
এ সময় আরও জানানো হয়, গতকাল সকালে এরিক এরশাদ ও তাঁর মা বিদিশা ঢাকা থেকে রংপুর নগরীর পল্লীনিবাসে আসেন। সেখানে তাঁরা এইচ এম এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে পল্লীবন্ধু কোল্ড স্টোরেজে যান। সেখানে আবদুল বারী ও সামছুজ্জামানের লোকজন এরিক এরশাদ ও বিদিশাকে ধাক্কাধাক্কি, গালিগালাজ করেন। এ কারণে তাঁরা হিমাগারে যেতে পারেননি। একপর্যায়ে তাঁরা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে থানা-পুলিশের সদস্যরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এরিক এরশাদ বলেন, ‘আমার ভরণপোষণের জন্য বাবা এরশাদ ট্রাস্ট গঠন করলেও আমি আমার প্রাপ্য অর্থ পাচ্ছি না। আমার কোল্ড স্টোরেজ আবদুল বারী ও মুকুলের ছেলেরা নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাঁদের বোঝা উচিত, আমি এতিম, আমার বাবা নেই। এরপরও তাঁরা আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন, আমার মাকে গালিগালাজ করেছেন। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। দেশবাসীর কাছে আমি ন্যায্য বিচার চাই।’
পরে বিদিশা বলেন, এরশাদ ট্রাস্টের যে কমিটি ছিল, তা মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও এরিকের সম্পত্তি হস্তান্তর করা হচ্ছে না। এরিক একজন প্রয়াত রাষ্ট্রপতির সন্তান। তাঁর বাবা বেঁচে থাকাকালীন বিলাসবহুল জীবন যাপন করেছেন। বর্তমানে ট্রাস্টের সম্পত্তির টাকা না পাওয়ায় তিনি আর্থিক সংকটে ভুগছেন। তাঁর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। হিমাগারের ৩০ শতাংশ শেয়ার এরিকের চাচা সামছুজ্জামানের নামে রয়েছে। তিনি এরিকের কোনো খোঁজ রাখেন না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে অভিযুক্ত সামছুজ্জামান ফোন ধরেননি। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আবদুল বারী বলেন, ‘আমাদেরই ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে—এই মর্মে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এরিক এরশাদ থানায় কোনো অভিযোগ দেননি। হিমাগার যাঁরা পরিচালনা করছেন, তাঁদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’