কারা তাঁদের আক্রমণ করতে চাচ্ছেন, জানতে তিন সমন্বয়ককে হেফাজতে নিয়েছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে তুলে নেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আটককৃত সমন্বয়কদের মধ্যে একজন তাঁর বাবাকে ফোন করে বলেছিলেন, “আমি আত্মগোপন করলাম, আপনারা আমি কোথায় আছি, জানাবেন না।” এ রকম খবর যখন আমরা সোশ্যাল মিডিয়াতে পাই, তখন তাঁদের আমরা সেফ কাস্টডিতে নিয়েছি। আমরা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি, কারা তাঁদের আক্রমণ করতে চাচ্ছেন। এগুলোর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আজ শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা পরিদর্শন শেষে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিমরাইলে পুড়িয়ে দেওয়া হাজী ইব্রাহিম খলিল শপিং কমপ্লেক্স, পিবিআই অফিস, পাসপোর্ট অফিস পরিদর্শন করেন। পরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস পরিদর্শন করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আবদুল্লাহ আল–মামুন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, র্যাব-১১ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল প্রমুখ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, আমাদের সন্তানেরা অলরেডি ৩০ বছর পার করে ফেলেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা এটাও মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে থাকবে না। এটা অলরেডি মেধাতালিকার কাছে চলে গেছে। কাজেই কোটা ৯৮ শতাংশ মেধায় চলে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম, আপিল বিভাগের রায়কে তাৎক্ষণিকভাবে ছাত্ররা স্বাগত জানিয়ে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখলাম, তাঁরা সেই কাজটি করেননি। কারণ, তাঁরা তাঁদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়, এটাই প্রমাণ হয়েছে, এই কয়েক দিনের ধ্বংসলীলা খেলা দেখে। তাঁরা জামায়াত, বিএনপি এবং জঙ্গি—যারা আমাদের স্বাধীনতা চায়নি, যারা জঙ্গির উত্থান ঘটাতে চেয়েছিল, যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে দেশকে অকার্যকর করার প্রচেষ্টা করেছিল, তাদের হাতের ক্রীড়ানক হয়ে গিয়েছে। তারা মানুষের শত্রু, জনগণের শত্রু ও তারা দেশের শত্রু।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একটি মহল এমনভাবে গুজব প্রচার করছে, এমন সব কথা বলছে, যেগুলো শুনলে সাধারণ মানুষও ঠিক থাকতে পারে না, বিভ্রান্ত হচ্ছে। এসব বিভ্রান্তি ও গুজব থেকে দেশবাসীকে বাঁচানোর জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘তারা একদিকে গুজব ছড়িয়েছে, আরেক দিকে আক্রমণ করেছে, তারা সংঘবদ্ধ আক্রমণ করেছে। এ রকম সংঘবদ্ধ আক্রমণ ডেডিকেটেড ফোর্সরাই করতে পারে। যেটা নাকি জামায়াত-বিএনপি এবং এই জঙ্গিদেরই কাজ। আমরা প্রমাণও পাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন কতগুলো বাচ্চা ছেলেদের নিয়ে এসে তাদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।’