মানিকগঞ্জে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি
মানিকগঞ্জে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে পিটুনি দিয়েছে ছাত্র–জনতা। এ সময় তাঁর বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
পরে সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে পাঠানো হয়।
মারধরের শিকার মনিরুল ইসলাম ওরফে মিম (২৬) মানিকগঞ্জের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রফি অপুর ছেলে। তাঁদের বাড়ি জেলা শহরের উত্তর সেওতা এলাকায়। গত বুধবার রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে মনিরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে মনিরুল ইসলামকে আদালতে তোলার খবর শুনে ওই এলাকায় জড়ো হতে থাকেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা। এ পরিস্থিতিতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আদালতের হাজতখানা থেকে মনিরুলকে পুলিশের হেলমেট ও বুকে পুলিশের জ্যাকেট পরিয়ে প্রিজন ভ্যানে তোলার চেষ্টা করা হয়। এ সময় তাঁকে লক্ষ্য করে ছাত্র-জনতা ডিম নিক্ষেপ করা শুরু করেন। একদল লোক পুলিশের কাছ থেকে মনিরুলকে ছিনিয়ে নিয়ে মারধর শুরু করেন। পুলিশ সদস্যরা মনিরুলকে প্রিজন ভ্যানে তুলতে ব্যর্থ হয়ে আবার তাঁকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যান। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় কর্মী ওমর ফারুক বলেন, গত ১৮ জুলাই জেলা শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ধারালো অস্ত্র নিয়ে মনিরুলসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা তাঁকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেন এবং মারধর করেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মনিরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যার দিকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা তাঁর ওপর হামলা করেন। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।