আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে প্রথমবারের মতো চলল ‘গ্যাং কার’
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে প্রথমবারের মতো ‘গ্যাং কার’ বা ‘ট্র্যাক কার’ চালানো হয়েছে। ‘গ্যাং কার’ নামে পরিচিত ‘ট্র্যাক কার’ বিশেষ আকৃতিতে নির্মিত রেলের ইঞ্জিন।
বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন ইয়ার্ডে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের প্রস্তুতি হিসেবে এ ‘ট্র্যাক কার’ চালানো হয়। ২২ আগস্ট এ রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের কথা আছে।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ভাস্কর বকশি বলেন, পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের প্রস্তুতি হিসেবে সন্ধ্যায় ট্র্যাক কার চালানো হয়েছে। পুরো রেলপথ সম্পূর্ণ প্রস্তুত না হওয়ায় গঙ্গাসাগর ইয়ার্ডেই চালানো হয়। যেটুকু কাজ বাকি, তা ২২ আগস্টের আগে শেষ হয়ে যাবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের রেলওয়ের সঙ্গে এ রেলপথ সংযুক্ত হবে। এতে দুই দেশের বাণিজ্য ও সংযোগ বৃদ্ধি পাবে। রেলপথ চালু হলে আগরতলা থেকে কলকাতা হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটারের দূরত্ব কমে ৩৫০ কিলোমিটার হবে।
২০১৮ সালে জুলাই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ১৮ মাস। এরপর করোনাসহ নানা কারণে পাঁচ দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। আখাউড়া-আগরতলায় প্রায় সাড়ে ১৫ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে বাংলাদেশ অংশে সাড়ে ১০ কিলোমিটার ও আগরতলা অংশে ৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশ অংশের সাড়ে ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার। আগরতলা রেলওয়ে স্টেশন থেকে নিশ্চিন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনে যুক্ত হবে দুই দেশের রেলপথ। আসবে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন পর্যন্ত।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা। প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশ বাস্তবায়নে ব্যয় প্রায় ২৪১ কোটি টাকা। আগামী সেপ্টেম্বরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আখাউড়া-আগরতলার এ রেলপথ উদ্বোধনের কথা আছে।