কালকিনিতে ফাঁদ পেতে কুমির ধরার পর পিটিয়ে হত্যা
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় একটি খালে কুমির দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। পরে স্থানীয় জেলেদের সহযোগিতায় ফাঁদ পেতে কুমিরটি জালে আটকে ফেলা হয়। পরে কুমিরটিকে পিটিয়ে হত্যা করে উৎসুক জনতা।
আজ শনিবার বেলা ১টার দিকে উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের নতুন আন্ডারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কুমিরটি প্রায় আট ফুট লম্বা ও দুই ফুট প্রস্থ।
মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘খালের মধ্যে একটি কুমির দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন কুমিরটি ধরেন। পরে তাঁরা পিটিয়ে কুমিরটি হত্যা করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমাদের টিম পাঠানো হয়েছে। মৃত কুমিরটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বন বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার পালরদী নদী ও আড়িয়াল খাঁ নদে কিছুদিন ধরে একটি কুমির দেখতে পান স্থানীয় লোকজন।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনও মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে। এরপর সতর্ক অবস্থানে থাকেন বাসিন্দারা। আজ সকালে উপজেলার নতুন আন্ডারচরের পালরদী নদীর সংযোগ খালে কুমির দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। পরে জেলেদের সহযোগিতা নিয়ে ওই খালে ফাঁদ পাতে ওই কুমিরটি আটকে ফেলা হয়। পরে রশি দিয়ে বেঁধে সমতল ভূমিতে কুমিরটি আনা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে সেখানে ভিড় জমান স্থানীয় লোকজন। একপর্যায়ে কুমিরটিকে তাঁরা পিটিয়ে হত্যা করেন।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘কুমির আটকের খবর পেয়ে বন বিভাগের লোকজনকে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে উপজেলা প্রশাসনও যায়। উৎসুক জনতা কুমিরকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। কিন্তু বন্য প্রাণী হত্যা করা আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ। মৃত কুমিররের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করে বন বিভাগ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
মাদারীপুর বন্য প্রাণী সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুমির দেশে এখন বিলুপ্তি প্রায়। এই প্রাণীটি মাদারীপুরের নদ–নদীতে দেখা যায় না। ধারণা করা হচ্ছে, কুমিরটি সুন্দরবন থেকে বিভিন্ন নদ নদী হয়ে মাদারীপুরে আসতে পারে। কুমিরটি ধরার পরে জীবিত উদ্ধার করতে আমরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু স্থানীয় উৎসুক জনতা কুমিরটি পিটিয়ে মেরে ফেলে। এ ঘটনায় প্রাণিকুলের সুরক্ষা ও সংরক্ষণে সচেতনতার অভাবের দিকেও ইঙ্গিত করে। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।’