ভিজিএফের চাল বিতরণ অনুষ্ঠানে ভাইয়ের জন্য ধানের শীষে ভোট চাইলেন বিএনপি নেতা

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে ভিজিএফের চাল বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার পুটিমারা ইউনিয়ন পরিষদে
ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে ভিজিএফের চাল বিতরণ অনুষ্ঠানে সুবিধাভোগীদের কাছে ধানের শীষ মার্কায় ভোট চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার পুটিমারা ইউনিয়ন পরিষদে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০ কেজি করে বিনা মূল্যে ভিজিএফের চাল বিতরণ অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। সরকারি অনুষ্ঠানে বিএনপির দলীয় প্রতীকে ভোট চাওয়ার ঘটনায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির দিনাজপুর জেলা শাখার সহসভাপতি আতিকুর রহমান ওরফে রাজা মাস্টার। অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর চাচাতো ভাই বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দিনাজপুর-৬ আসনের (বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট) ধানের শীষের মনোনয়নপ্রত্যাশী এ জেড এম জাহিদ হোসেনের জন্য ভোট চান।

এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় আতিকুর রহমানের সঙ্গে বিএনপির উপজেলা ও ইউনিয়ন শাখার বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ভিজিএফের চাল নিতে অপেক্ষমাণ সুবিধাভোগীরা দাঁড়িয়ে ছিলেন।

বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমার একটা অনুরোধ, ইতিপূর্বে যা করছি, করছি; যেটুকু যে জায়গাত ভোট দিয়েছি, দিয়েছি। আগামী দিনে আমার ভাই ডা. জাহিদ সাহেব ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। আপনারা বিশেষ করে আমার ইউনিয়নে, আমি হাতজোড় করে বলতেছি, আপনারা ধানের শীষে ভোট দেবেন।’

আতিকুর রহমান আরও বলেন, ‘আমার ভাই খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক। উনি এখন খালেদা জিয়া-তারেক জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে আছেন। উনি খালেদা জিয়ার একেবারে আস্থাভাজন ও কাছের লোক। আপনাদের চাকরিবাকরি ও বিভিন্ন কাজে আমি রাজা মাস্টার কথা দিচ্ছি, বেঁচে থাকলে সরকার যদি আসে, আমার ভাই যদি আসে, আপনাদের কোনো অভাব থাকতে দেব না। চাকরি থেকে শুরু করে এখনো আমি কম সহযোগিতা করি না। এই কম্বল বিতরণ থেকে শুরু করে চাকরি, বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি আমি বহু এলাকার লোককে দিছি। তারপরও বিভিন্ন ধরনের অসুখবিসুখ, আপনাদের যেকোনো অসুখবিসুখ হলে আমার ভাই যদি একটা মোবাইল করে, তাহলে ওই মেডিকেলে তারা এখনো চিকিৎসা দিতে বাধ্য।’

আজ বুধবার মুঠোফোনে আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামনে তো ভোটের দিন এসে গেছে; আর বেশি দিন আছে কোথায়। আগামী সংসদ নির্বাচন খু্ব বেশি হলে ৬–৮ মাস। একটু বললে (ভোট চাইলে) অসুবিধা কি? আমি বলেছি, আগামী সংসদ নির্বাচনে আপনারা ধানের শীষে ভোট দেবেন। আর জাহিদ ভাই নির্বাচন না করলেও আপনারা ধানের শীষে ভোট দেবেন। আমরা ধানের শীষে ভোট চেয়েছি।’

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ রকম একটি সরকারি কর্মসূচিতে বিএনপির একজন নেতার প্রকাশ্যে ভোট চাওয়ার ঘটনাটি দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তিনি এভাবে কথাগুলো না–ও বলতে পারতেন।’