পঞ্চগড়ে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির একটি ঘরে আগুন

পঞ্চগড় বোদা পৌরসভার দক্ষিণ সাতখামার এলাকায় সোমবার দিবাগত রাত একটার পর অগ্নিকাণ্ডে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়ির খড় রাখার ঘর পুড়ে গেছে। ছবিটি মঙ্গলবার দুপুরে তোলা
ছবি : সংগৃহীত

পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়ির একটি ঘর আগুনে পুড়ে গেছে। টিনশেডের ওই ঘরে ধানের খড় রাখা হতো। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার পর বোদা পৌরসভার দক্ষিণ সাতখামার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস আগুন লাগার কারণ জানাতে না পারলেও এতে অন্তত লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে।

বোদা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাত একটার পর সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়ির বাইরের উঠানে থাকা খড় রাখার টিনশেডের ঘরটিতে আগুন জ্বলতে দেখে চিৎকার শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করার পাশাপাশি বোদা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। খবর পেয়ে বোদা ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডের সময় পলাতক সাদ্দাম হোসেনের মা–বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন বিক্ষুব্ধ জনতা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়িটি পুড়িয়ে দেন। এরপর ওই বাড়ির তিনটি কক্ষ মেরামত (সংস্কার) করে তাঁর মা–বাবা ও বড় ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা সেখানে বসবাস করছেন।

সাদ্দাম হোসেনের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘রাত তখন প্রায় ১টা ২০ মিনিটে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। আমাদের এক ভাতিজা আগুন আগুন করে পাশের বাড়ি থেকে চিৎকার–চেঁচামেচি করছিল। পরে উঠে দেখি আমাদের বাইরের উঠানে থাকা খড়ের ঘরটিতে আগুন জ্বলছে। কীভাবে আগুন লেগেছে জানি না। এখানে তো আগুন লাগার মতো না, মনে হচ্ছে মানুষে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তবে ওই সময় পাশের রাস্তা দিয়ে একটা দ্রুতগতির মোটরসাইকেলে অপরিচিত দুজন ব্যক্তি নাকি যেতে যেতে গ্রামের লোকজনকে বলছিল “সাদ্দামের বাড়িতে আগুন লাগছে, তোমরা যাও”।’

আনোয়ারা বেগম জানান, ওই ঘরে ১০ বিঘা জমির ধানের খড় রাখা হয়েছিল। সেই সঙ্গে সেখানে কিছু লাকড়ি ছিল। আগুন লাগার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী আর ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিভিয়েছে।

বোদা উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর মো. রায়হান ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন সম্পূর্ণ নিভিয়ে ফেলি। সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির বাইরের উঠানের ওই খড় ও লাকড়ি রাখা ঘরটি ছাড়া আর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় এক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগুনের সূত্রপাত এখনো জানা যায়নি।’

সাদ্দাম হোসেনদের বাড়ি বোদা পৌরসভায় হলেও সেখানে পুলিশি কার্যক্রম চলে আটোয়ারী থানা থেকে। ঘটনার বিষয়ে ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম সরকার মুঠোফোনে বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়িতে রাতে একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ওই এলাকাটি বোদা থানার কাছাকাছি হওয়ায় সেখান থেকে পুলিশ গিয়েছিল। তবে কীভাবে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।