নোয়াখালীর পুকুরে ৩৫ বছর ধরে আটকে রাখা কুমির উদ্ধার
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় একটি পুকুরে প্রায় ৩৫ বছর ধরে অবৈধভাবে আটকে রাখা লোনাপানির একটি কুমির উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলা চরহাজারী এলাকা থেকে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়। পরে আজ রোববার সকালে কুমিরটিকে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের জলাশয়ে ছাড়া হয়েছে। পুকুর থেকে কুমির উদ্ধার অভিযান দেখতে গতকাল শত শত মানুষ ভিড় করেন।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাসান নামের এক ব্যক্তি ১৯৮৯ সালের দিকে সুন্দরবন থেকে দুটি কুমিরের বাচ্চা নিয়ে এসে নিজেদের পুকুরে ছেড়ে দেন এবং লালন–পালন করতে থাকেন। এর মধ্যে একটি কুমির প্রায় ২০ বছর আগে মারা যায়। বাকি ছিল আরেকটি কুমির। বাড়িওয়ালা অবৈধভাবে একটি লোনাপানির কুমির পুকুরে আটকে রেখে লালন-পালন করছেন—এমন তথ্য গত বছর কেউ একজন ফেসবুকে প্রচার করেন। এর সূত্রে ধরেই বন্য প্রাণী ও অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল অভিযান চালিয়ে কুমিরটি উদ্ধার করেছে। পরে কুমিরটি ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ছাড়া হয়েছে।
কুমির উদ্ধার অভিযানে নোয়াখালীর উপকূলীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ, বন্য প্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কুমির উদ্ধারে সহযোগিতা করায় কুমিরের মালিক হাসানের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে কুমির লালন-পালনের কারণে বাড়িটি স্থানীয় লোকজন ‘কুমিরওয়ালা বাড়ি’ হিসেবে চিনতেন।
উদ্ধারকারী দলের প্রধান বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর বন অধিদপ্তরের নজরে আসে বিষয়টি। এভাবে অবৈধভাবে কুমিরকে আটকে রাখা বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২–এর পরিপন্থী। মালিক স্বেচ্ছায় কুমিরটি হস্তান্তর করায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।