ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের পানিতে নিমজ্জিত ও ঝড়ে বিধ্বস্ত সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে মিলেছে আরও বন্য প্রাণীর মৃতদেহ। ঝড়ের পর ২ দিনে মোট ৩৯টি হরিণ এবং ১টি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে বন বিভাগ।
ঝড়ের পর গতকাল সোমবার প্রথম দুটি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল বনের অভ্যন্তরে। আজ মঙ্গলবার সকালে ২৪টি এবং দুপুরের দিকে আরও ১৩টি হরিণের মৃতদেহ নদী ও সমুদ্রতীরবর্তী বনাঞ্চল থেকে উদ্ধার করা হয়। উচ্চ জোয়ারের পানি সুন্দরবনে গহিনে উঠে যাওয়ায় হরিণগুলো ভেসে যাওয়ার পর সাঁতরে কূলে উঠতে না পেরে মারা গেছে বলে ধারণা বন বিভাগের। আরও অনেক মরদেহ ভেসে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। এর বাইরে আহত অবস্থায় ১৭টি হরিণকে উদ্ধার ও চিকিৎসা দিয়েছে বন বিভাগ।
বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দে বলেন, আজ সকালে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্য ও জামতলা এলাকা থেকে ভেসে আসা মৃত ২৪টি হরিণ উদ্ধার করা হয়। দুপুরের দিকে সুন্দরবন করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্র এলাকার সামনের পশুর নদসহ বনের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও ১৩টি হরিণ এবং ১টি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
বন সংরক্ষক মিহির কুমার বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। এই জোয়ারের উচ্চতা ছিল ১০ থেকে ১২ ফুট। পানি দেখে বন্য প্রাণীর ক্ষতির আশঙ্কা করছিলাম। মৃতদেহ পাওয়ায় বন বিভাগ উদ্বিগ্ন। মৃত হরিণগুলো কটকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। আর জীবিত হরিণ বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে গত রোববার থেকে দফায় দফায় সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এ সময়ে বাগেরহাটের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে জানিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
বাগেরহাটে ১ নারীর মৃত্যু
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বাগেরহাটের শরণখোলায় ফজিলা বেগম নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের বিধানসাগর গ্রামে নিজ ঘর থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার হয়। ঝড়ের রাতে ওই ঘরে তিনি একাই ছিলেন। এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় এবং মুঠোফোন নেটওয়ার্ক না পাওয়ায় বিষয়টি প্রকাশ পায়নি। আজ জেলা প্রশাসন ঝড়ে ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।