আশুলিয়ায় গ্যাসের বিস্ফোরণে স্বামীর মৃত্যুর তিন দিন পর স্ত্রীও মারা গেলেন
ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় গ্যাসের বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ শারমিন বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রোববার শারমিনের স্বামী সুমন রহমান (৩০) মারা যান।
গত শুক্রবার আশুলিয়ার গোমাইল এলাকায় ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ নিয়ে তিনজনের মৃত্যু হলো। দগ্ধ আরও আটজন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গৃহবধূ শারমিন বেগম (৩০) শরীয়তপুর জেলার পালেরচর ইউনিয়নের আবদুল আলী শিকদারের মেয়ে। জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান বলেন, আগুনে শারমিন বেগমের শরীরের ৪২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। শনিবার দিবাগত রাতে মারা যান সুমনের বোন শিউলি আক্তার (৩২)।
নিহতদের স্বজনেরা জানান, গত শুক্রবার আশুলিয়ার গোমাইল এলাকায় ভাই সুমন রহমানের ভাড়া বাসায় স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে যান শিউলি। ওই বাসায় সুমন স্ত্রী শারমিন ও তাঁদের দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া ওই দিন সুমনের ভাই সোহেল, সুমনের মা সূর্যবানু, ফুফু জহুরা বেগম ওই বাসায় এসেছিলেন। সেদিন বিকেল থেকে নানা পদের রান্নাবান্না চলছিল। মশার উপদ্রবের কারণে সন্ধ্যার খানিক আগেই বাসার সব জানালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে রান্নাঘরে আবার গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গেলে বিকট শব্দ হয়। মুহূর্তে ঘরময় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে সবাই দগ্ধ হন। পরে তাঁদের আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়।
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁদের জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিউলি আক্তার শনিবার দিবাগত রাতে মারা যান। শিউলির ভাই সুমন রোববার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দগ্ধ ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনদের ধারণা, গ্যাসের লিকেজ থেকে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান জানিয়েছেন, আগুনে সূর্য বানুর শরীরের ৭ শতাংশ, মোছা. জহুরা বেগমের ৫ শতাংশ, মো. মনির হোসেনের ২০ শতাংশ, সোহেল রানার ১০ শতাংশ, ছামিন মাহমুদের ১৪ শতাংশ, মাহাদীর ১০ শতাংশ, সোয়ায়েদের ২৭ শতাংশ, ও মোছা. সুরাহার ৯ শতাংশ পুড়ে গেছে।