মানুষের শেখানো বুলি ভুলে বনে ফিরল পাহাড়ি ময়নাটি
সাত মাস আগে নাটোরের এক মুদিদোকান থেকে একটি পাহাড়ি ময়না পাখি উদ্ধার করে বন বিভাগ। দোকানে থাকার সময় পাখিটি উড়তে ভুলে গিয়েছিল। দোকানির সঙ্গে নানা কথা বলত। সাত মাস পর অবমুক্ত করার সময় পাখিটি মানুষের শেখানো বুলি ভুলে গিয়েছিল; কিন্তু ঠিকই উড়ে যেতে পেরেছে।
আজ সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ উদ্যানে এই পাখিটি অবমুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে একটি ভুবন চিলও প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এ এম সালেহ রেজা, রাজশাহী বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) মো. রফিকুজ্জামান শাহ্, বন্য প্রাণী পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির, ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার মো. সরোয়ার হোসেন খান, ফরেস্টার মো. গোলাম কবির ও জুনিয়র ওয়াইল্ড স্কাউট মানিক চন্দ্র দে উপস্থিত ছিলেন।
বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, নাটোরের সিংড়া উপজেলার বামিহাল গ্রামের একটি মুদিদোকান থেকে চলনবিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সদস্যরা ময়নাটিকে উদ্ধার করেছিলেন। পরে বন বিভাগের লোকজন গিয়ে আর দোকানিকে পাননি। তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন। স্থানীয় লোকজন কেউ তাঁর পরিচয় বলতে চাননি। ফলে তাঁর নাম জানা যায়নি। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া যায়নি। উদ্ধার করার সময় পাখিটি গৃহপালিত পাখির মতো আচরণ করছিল। সে উড়তে ভুলে গিয়েছিল। দোকানি তাঁর বিনোদনের জন্য পাখিটি দোকানে রেখেছিলেন। তিনি পাখিটির সঙ্গে নানা কথা বলতেন। পাখিটিও তাঁর কথার উত্তর দিত।
জাহাঙ্গীর কবির বলেন, তাঁরা ময়নাটিকে উদ্ধার করার পর রাজশাহীতে তাঁদের রেসকিউ সেন্টারে এনে উড়তে শেখার পরিবেশে ছেড়ে দিয়েছিলেন। সাত–আট মাস কেউ তার সঙ্গে কথা বলেনি। পাখিটি পুরোপুরি প্রকৃতিতে টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করলে বন বিভাগ তাকে অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। এখন সে উড়তে পারলেও দোকানির শেখানো বুলি ভুলে গেছে। ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ময়নাটি উদ্যানের একটি উঁচু গাছের ডালে গিয়ে বসে।
এদিকে ১৫ দিন আগে নাটোর থেকে উদ্ধার করা একটি আহত ভুবন চিলকেও অবমুক্ত করা হয়। চিলটিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। ১৫ দিনের পরিচর্যায় চিলটি সুস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।