‘সেলফ ডিফেন্স স্টিক’ দিয়ে সাবেক যুবদল নেতার মারধরের পর বৃদ্ধের মৃত্যু

নিহত আইয়ুব জাহাঙ্গীরছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে সন্দ্বীপ উপজেলায় মাথায় ‘সেলফ ডিফেন্স স্টিক’ দিয়ে আঘাত করে এক বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ব্যক্তির স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় যুবদলের সাবেক এক নেতা ওই বৃদ্ধকে হত্যা করেছেন। আজ সোমবার বেলা পৌনে একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আইয়ুব জাহাঙ্গীর (৬২)। তিনি উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দৌলতেরগো বাড়ির বাসিন্দা। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মো. সুমন। তিনি উপজেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাহাঙ্গীরের সঙ্গে স্থানীয় এক ব্যক্তির জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারির একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় জাহাঙ্গীর কারাগারে ছিলেন। মাস দেড়েক আগে জাহাঙ্গীরকে জামিন করিয়ে দেবেন বলে তাঁর পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন সাবেক যুবদল নেতা সুমন। এর মধ্যে জাহাঙ্গীরের জামিন হয়। জামিনের পর জাহাঙ্গীরের পরিবারের কাছে টাকা দাবি করে আসছিলেন সুমন। তবে জাহাঙ্গীরের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল সুমন টাকা দাবি করলেও জামিনের জন্য কিছুই করেননি। পরিবারের প্রচেষ্টায় জাহাঙ্গীরের জামিন হয়েছে। তবু সুমনের চাপাচাপিতে পরিবারের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। এরপরও বাকি এক লাখ টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন সুমন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দুপুরে যুবদল নেতা সুমনসহ তিনজন ব্যক্তি মোটরসাইকেল নিয়ে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে যান। এ সময় বাড়ির পুকুরে জাহাঙ্গীর গোসল করছিলেন। তাঁকে সেখান থেকে ডেকে মারধর শুরু করেন সাবেক যুবদল নেতা সুমন। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীরের মাথায় সেলফ ডিফেন্স স্টিক দিয়ে আঘাত করা হয়। এ সময় জাহাঙ্গীর আহত হয়ে পুকুরের পানিতে পড়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়েছে।

জানতে চাইলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সুমনের আঘাতে জাহাঙ্গীর নিহত হয়েছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন। এর মধ্যে নয়ন আলী নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মো. সুমন পলাতক রয়েছেন। তাই এ ঘটনায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু তাহের প্রথম আলোকে বলেন, সুমন উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন। তবে এখন কোনো পদে নেই। তাঁর ব্যক্তিগত কোনো কর্মকাণ্ডের দায় সংগঠন নেবে না।